শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করার উপায়

আমরা চারটি উপায়ে শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে পারি, যেমন- খাবারের মাধ্যমে, ওষুধের মাধ্যমে, ব্যায়ামের মাধ্যমে এবং দোয়ার মাধ্যমে। এখন আপনি নিশ্চিত করুন কোন পদ্ধতির মাধ্যমে আপনি আপনার শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে চাচ্ছেন?

আমরা আমাদের শক্তিকে দুটি উপায়ে ভাগ করতে পারি, যেমন- শারীরিক শক্তি, এবং মানসিক শক্তি। এই দুইটির কম্বিনেশনে আমরা সুস্থ থাকি। শরীর ভালো না থাকলে মন ভালো থাকেনা। অপরদিকে মন ভাল না থাকলে আমাদের শরীর ভালো থাকে না। উভয় একে অপরের উপর নির্ভরশীল।

এখন আমরা জানবো কীভাবে আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করা যায় সে সম্পর্কে।

শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করার উপায়

খাবারের মাধ্যমেঃ

ডিম: ডিম হলো আমিষজাতীয় খাদ্য। ডিমে রয়েছে প্রাকৃতিক ভিটামিন, যা দেহগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়াও ডিমে রয়েছে অতি মূল্যবান ওমেগা-৩, যা হৃৎপিণ্ডকে কার্যকর রাখতে সাহায্য করে। তাই খাবারের মাধ্যমে শক্তি বৃদ্ধির প্রথম খাবারটা আমরা সাজেস্ট করব ডিম।

দুধ: দুধ হল মানুষের খাদ্য তালিকার মধ্যে একটি, এটি স্তন্যপায়ী প্রাণীর স্তন্যগ্রন্থি থেকে উৎপন্ন অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এক প্রকার সাদা তরল পদার্থ। এটি আমাদের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। দুধের মধ্যে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন D এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা হাড়ের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক।

ছোলা: ছোলা আপনার হারানো শক্তি ফিরে পেতে সাহায্য করবে। এটি প্রোটিন ও ফাইবারের ভালো উৎস, যা শরীরের শক্তি এবং সহনশীলতা বাড়াতে সহায়ক।

এছাড়াও যে যে খাবার আপনার শক্তিকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে তা এক নজরে:

  • বাদাম
  • কলা
  • ডাল
  • পালং শাক
  • ওটস
  • সালমন মাছ
  • সবুজ শাকসবজি

এই খাবারগুলো শরীরের শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি হজম ব্যবস্থা, হার্ট হেলথ, এবং মোট শারীরিক স্বাস্থ্যেও ভালো প্রভাব ফেলে।

ওষুধের মাধ্যমে:

শক্তি বৃদ্ধির জন্য কিছু ওষুধও রয়েছে, তবে এগুলি ব্যবহারের আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কিছু সুপারফুড, যেমন গোজি বেরি, গ্লুটামিন, ক্রিয়েটিন, এবং অন্যান্য পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্টও শক্তি বৃদ্ধির জন্য সহায়ক হতে পারে। তবে এগুলো ব্যবহারের আগে একটি চিকিৎসকের পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ব্যায়ামের মাধ্যমে:

প্ল্যাঙ্ক হোল্ড: হাতের তালু এবং পায়ের আঙ্গুলে ভর দিয়ে সম্পূর্ণ শরীরকে উঁচুতে রাখুন। মাথা থেকে পা পর্যন্ত সমান উঁচু হতে হবে। এই ব্যায়ামটি আপনার কোর মাংসপেশি শক্তিশালী করে এবং পিঠের সমস্যার উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে।

ওয়াল সিট বা দেয়ালে বসা: পায়ের গোড়ালি, উরু এবং পেটের পেশিগুলোকে সহনশীল হিসেবে তৈরি করতে এটি দুর্দান্ত একটি ব্যায়াম। দৈনিক ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট এই ব্যায়ামটি করুন এবং আপনার পায়ের শক্তি বৃদ্ধি করুন।

গ্লুট ব্রিজ হোল্ড: হাঁটু বাঁকিয়ে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাতগুলো পাশে সোজা করে রাখুন। এরপর এক পা সোজা করুন এবং নিতম্ব যতটা সম্ভব উঁচু করুন। যাতে পা এবং আপনার কাঁধ একটি সরলরেখায় আসে।

আইসোমেট্রিক শোল্ডার প্রেস: দুই হাতে ডাম্বেল ধরে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এটি আপনার কাঁধের পেশি এবং বাহুর শক্তি বাড়াতে সহায়ক।

এছাড়াও, যোগব্যায়াম এবং শক্তি প্রশিক্ষণও শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ দিন শরীরচর্চা করুন এবং নতুন চ্যালেঞ্জ নিন।

দোয়ার মাধ্যমে:

শারীরিক শক্তি বৃদ্ধির দোয়া: আল্লাহুম্মা সাব্বিতনি, ওয়াজআলনি হা-দিয়াম মাহদিয়্যা। অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমাকে স্থির রাখুন এবং আমাকে হেদায়েতপ্রাপ্ত ও হেদায়েতকারী বানিয়ে দিন।

এই দোয়া আপনাকে মানসিক শান্তি এবং শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়ক হবে। নিয়মিত দোয়া এবং প্রার্থনা আপনার মন ও শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করবে।

এছাড়া কিছু সহজ পরামর্শ:

  • প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন।
  • ভালো ঘুম নিশ্চিত করুন, প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি।
  • বিরতি নিন এবং অতিরিক্ত চাপ থেকে দূরে থাকুন।
  • স্মোকিং ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন।

মোটকথা, শারীরিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা, পুষ্টিকর খাদ্য, এবং ভালো মানসিক স্বাস্থ্যের সমন্বয় প্রয়োজন। আপনি যদি এই টিপসগুলো মেনে চলেন, তবে আপনার শরীরের শক্তি এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য অনেক ভালো হবে।

নিষ্কর্ষ

শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতে হলে কেবল এক ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করলেই হবে না। একাধিক পদ্ধতির সমন্বয়ে আমরা আমাদের শারীরিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করতে পারি। শারীরিক শক্তি, খাবারের মাধ্যম, ব্যায়াম, ওষুধ এবং দোয়ার মাধ্যমে আপনি সুস্থ থাকতে পারবেন। আপনি যে পদ্ধতিটি অনুসরণ করবেন, তার সাথে সঠিক পরামর্শ গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

আরো জানুনঃ

You cannot copy content of this page

Scroll to Top