শ্বসন কাকে বলে

শ্বসন কাকে বলে জানতে পারবে এই প্রশ্নের মাধ্যমে। শোষণের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো আমরা শেয়ার করব। অনেকেই অনলাইনে প্রশ্ন করেছে শোষণ কাকে বলে শব্দের অর্থ কি। তাদের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে, সুতরাং সম্পুর্ন পড়তে থাকুন।

শ্বসনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
শ্বসনের স্থান —> সজীব কোষ
শ্বসনের সময় —> দিবারাত্রি
শ্বসন অঙ্গাণু —> মাইটোকনড্রিয়া
শ্বসন বস্তু —> গ্লুকোজ
গ্লাইকোলাইসিস –> কোষের সাইটোপ্লাজম
ক্রেবস চক্র —> মাইট্রোকন্ডিয়া
প্রধান শ্বাস রঞ্জক —-> হিমোগ্লোবিন ও হিমোসায়ানিন

শ্বসন কাকে বলে
শ্বসন কাকে বলে

শ্বসন কাকে বলে ?

যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় দ্বারা অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বা অনুপুস্থিতিতে খাদ্যের দৈহিক জারণের ফলে খাদ্য স্থিতিশক্তি গতি শক্তিতে রূপান্তরিত হয় ও মুক্ত হয় তাকে শ্বসন বলে।

শ্বসনের বৈশিষ্ট্য :

  • শ্বসন একটি অপচিতিমূলক বিপাক ক্রিয়া।
  • এর ফলে জীবের শুস্ক ওজন হ্রাস পায়।
  • শ্বসন একটি তাপমোচী প্রক্রিয়া।

শ্বসন এর প্রকারভেদ :

শ্বসন দুই প্রকারের।

  1. সবাত শ্বসন
  2. অবাত শ্বসন।

সবাত শ্বসন :
যে শ্বসন পদ্ধতি বায়ুজীবী জীবকোষে শ্বসন বস্তু মুক্ত অক্সিজেন উপস্থিত সম্পূর্ণরূপে জারিত হয়ে জল এবং কার্বন ডাই অক্সাইড পরিণত হয় এবং শ্বসন বস্তু সম্পূর্ণরূপে নির্গত হয় তাকে সবাত শ্বসন বলে।

সবাত শ্বসন এর স্থান : এককোষী প্রাণী অ্যামিবা থেকে শুরু করে উন্নত শ্রেণীর বহুকোষী উদ্ভিদ এবং প্রাণীদেহে প্রতিটি সজিব কোষে এই ধরণের শ্বসন সংঘটিত হয়।

এই ধরণের শ্বসন কোষস্থ খাদ্য প্রধানত গ্লুকোজ কোষের সাইটোপ্লাজমে অক্সিজেন এর উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে কতগুলি উৎসেচকের সহায়তায় আংশিক ভাবে জারিত হয়ে পাইরুভিক অ্যাসিড এ পরিণত হয়। এই প্রক্রিয়াকে EMP পথ বলা হয়। 1 গ্রাম অনু গ্লুকোজ থেকে 686 কিলোক্যালরি শক্তি উৎপন্ন হয়।

অবাত শ্বসন :
যে শ্বসন পদ্ধতিতে অবায়ুজীবী জীব কোষে মুক্ত অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে শ্বসন বস্তু অক্সিজেনযুক্ত যৌগের অক্সিজেন কর্তৃক জারিত হয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড ও জলে পরিণত হয় এবং শ্বসন বস্তু মধ্যস্তশক্তির আংশিক নির্গমন ঘটে তাকে অবাত শ্বসন বলে।

অবাত শ্বসন এর স্থান : অবাত শ্বসন ডিনাইটিফাইং ব্যাকটেরিয়া, সালফার ব্যাকটেরিয়া, মিথেন ব্যাকটেরিয়া তে দেখা যায়। অবাত শ্বসন 1 গ্রাম অনু গ্লুকোজ থেকে 50 কিলোক্যালোরি তাপশক্তি উৎপন্ন হয়। এটি কোষের সাইটোপ্লাজম এর ঘটে।

শ্বসনের পদ্ধতি
গ্লাইকোলাইসিস:
এই প্রক্রিয়ায় কোষের সাইটোপ্লাজমে অক্সিজেনের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতিতে উৎসেচকের প্রভাবে গ্লুকোজ আংশিকভাবে জারিত হয়ে 2 অনু পাইরুভিক অ্যাসিড এবং 2 অনু ATP উৎপন্ন হয়। এম্বডেন, মেয়ারহফ, এবং পারনেস নামক বিজ্ঞানী প্রথম এই প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করেন বলে গ্লাইকোলাইসিস পদ্ধতি EMP পথ নামে পরিচিত।

ক্রেবস চক্র:
এটি কোষের মাইট্রোকন্ডিয়ায় অক্সিজেনের উপস্থিতিতে ঘটে। ইংরেজ প্রাণ-রসায়নবিদ হ্যানস ক্রেবস 1937 খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম এই প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করেন বলে তাঁর নাম অনুসারে এই চক্রকে ক্রেবস চক্র বলে। এই পর্যায়ে পাইরুভিক অ্যাসিড সম্পূর্ণরূপে জারিত হয়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, জল ও শক্তি উৎপন্ন করে। ক্রেবসচক্রে প্রথম উৎপাদিত জৈব যৌগটি হল সাইট্রিক অ্যাসিড যার মধ্যে 3টি কার্বক্সিল গ্রুপ থাকে। তাই ক্রেবসচক্রকে ট্রাই কার্বক্সিলিক অ্যাসিড চক্র বা TCA চক্র বলা হয়।

অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশন= যে প্রক্রিয়ায় জৈব যৌগের জারণের ফলে উচ্চশক্তিসম্পন্ন ফসফেট যৌব অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট (ATP) সংশ্লেষিত হয়, তাকে অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশন বলে। এটি মূলত মাইটোকনড্রিয়ায় সংঘটিত হয়।

শ্বসনের রাসায়নিক সমীকরণ
শ্বসনের সময় কোশস্থিত খাদ্যবস্তু অর্থাৎ গ্লুকোজ ( C₆H₁₂O₆ ) অক্সিজেনের উপস্থিতিতে জারিত হয়ে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, জল এবং শক্তি উৎপন্ন করে। অতএব, শ্বসনের রাসায়নিক সমীকরণটি হল-
উৎসেচক
C₆H₁₂O₆ + 6O₂ ———– 6CO₂ + 6H₂O + 686 Kcal

 
এই পোস্টের নাম শ্বসন কাকে বলে
এই পোস্টে অনুরূপ পোস্ট
সকল  শিক্ষার ক্যাটাগরি
 
হোম পেজে জেতে এখানে ক্লিক করুন

শ্বসন কাকে বলে FAQ

শ্বসন কাকে বলে ?

যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় দ্বারা অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বা অনুপুস্থিতিতে খাদ্যের দৈহিক জারণের ফলে খাদ্য স্থিতিশক্তি গতি শক্তিতে রূপান্তরিত হয় ও মুক্ত হয় তাকে শ্বসন বলে।

শ্বসন কত প্রকারের হয়?

শ্বসন দুই প্রকারের। (ক) সবাত শ্বসন (খ) অবাত শ্বসন।

শ্বসনের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?

শ্বসনের বৈশিষ্ট্য : (ক) শ্বসন একটি অপচিতিমূলক বিপাক ক্রিয়া। (খ) এর ফলে জীবের শুস্ক ওজন হ্রাস পায়। (গ) শ্বসন একটি তাপমোচী প্রক্রিয়া।

শ্বসন কোথায় হয়?
উঃ প্রতিটি সজীব কোষে শ্বসন ঘটে।
শ্বসন কখন হয়?
উঃ দিবারাত্রি।
কোন্ কোষ অঙ্গাণুর মধ্যে শ্বসন ক্রিয়াটি (বা ক্রেবস্ চক্রটি) সম্পন্ন হয়?
উঃ মাইট্রোকন্ডিয়া।
বায়ুশূন্য স্থানে শ্বাসকার্য চালাতে পারে এমন দুটি জীবের উদাহরণ দাও।
উঃ মনোসিস্টিস, গোলকৃমি, ফিতাকৃমি।
কন উদ্ভিদ এবং প্রাণিদেহে অবাত শ্বসন ঘটে?
উঃ ঈস্ট, মনোসিস্টিস
কোন্ ব্যাটিরিয়ার দেহে অবাত শ্বসন ঘটে?
উঃ ডিনাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া, মিথেন ব্যাকটেরিয়া।
কোহল সন্ধান কোন প্রকার জীবাণু দ্বারা ঘটে?
উঃ ঈস্টের দ্বারা‌
কোহল সন্ধানে কোন উৎসেচক অংশগ্রহণ করে?
উঃ জাইমেজ।
অবাত শ্বসনের ফলে উদ্ভিদ ও প্রাণিকোষে কি কি উৎপন্ন হয় ?
উঃ উদ্ভিদকোষে ইথাইল অ্যালকোহল (C₂H₅OH) ও কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয় আর প্রাণীকোষে ল্যাকটিক অ্যাসিড
উন্নত প্রাণিদেহে কোথায় এবং কখন অবাত শ্বসন ঘটে?
উঃ মনোসিস্টিস, গোলকৃমি ফিতাকৃমি প্রাণীদের দেহে অবাত শ্বসন ঘটে।
সবাত ও অবাত শ্বসনের সাধারণ পর্যায়টি কি?
উঃ সবাত ও অবাত শ্বসনের সাধারণ পর্যায়টি হল গ্লাইকোলাইসিস।
সবাত শ্বসনের পর্যায় দুটি কি কি?

“শ্বসন কাকে বলে”-এ 2-টি মন্তব্য

    • সাধারণত ভাবে বলতে গেলে atp কে জৈব মুদ্রা বলে অর্থাৎ অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট কে জৈব মুদ্রা বলে। মূলত এই ATP শক্তি জমা করে রাখে এবং প্রয়োজন অনুসারে অন্য বিক্রিয়ায় শক্তি সরবারাহ করে। এজন্য ATP-কে ‘জৈবমুদ্রা’ বা ‘শক্তি মুদ্রা’ (Biological coin or Energy coin) বলা হয়।

      জবাব

মন্তব্য করুন