চল এখানে সামান্য গরম-গরম গুজগুজ করি—রাত হয় না এমন দেশ! ব্যাপারটা একটু অদ্ভুত লাগে, কেমন? সবাই ভাবে, আরে ভাই, তাহলে ওখানকার মানুষ কি আর ঘুমায় না নাকি? চিন্তা নেই, ঘুম ঠিকই আসে—হালকা পর্দা টাঙিয়ে, আলো-ঝলমলে দিনেও একটা ভালো লম্বা ঘুম কেউ আটকাতে পারে না!
আসলে যত দোষ সেই পৃথিবীর অক্ষরেখার। পৃথিবীটা তো সোজা ঘুরে না, এক্কেবারে ২৩.৫ ডিগ্রি কানা-হেলায় ঘুরে চলে। এই হেলানোর ফলেই কিছু কিছু দেশ—একেবারে উত্তর আর দক্ষিণে—গ্রীষ্মকালে এমন হাল হয় যে সূর্য আর মাটির নিচে নামে না। মানে, ২৪ ঘণ্টাই, সূর্য ঠিক মাথার ওপরে চক্কর কাটছে। ব্যাপারটাই হচ্ছে মাইন্ডব্লোয়িং এক “মিডনাইট সান”। পুরাই ম্যাজিক!
তো, কোন কোন দেশ? টিএসপি দেখলে দেখবেন—নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, গ্রিনল্যান্ড, ক্যানাডার এক্কেবারে টপ সাইড অনেকে, রাশিয়ারও একটা অংশ। বছর কোন সময়? মে-জুলাই—তখনই মিডনাইট সানের ঝলক। দম নিতে চাইলে ওইদিকে চলে যান।
অন্যদিকে, দক্ষিণ গোলার্ধে? আরে, শুধু উত্তরেই না, দক্ষিণেও এই কাণ্ড ঘটে! নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চিলি, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়ার মজার কিছু জায়গা, নিউজিল্যান্ড, ভাগ্য ভালো থাকলে দক্ষিণ আফ্রিকারও টুকরো টুকরো অঞ্চলে। সূর্য দিব্যি রাজত্ব চালায়, নামতেই চায় না।
এই সব কাণ্ডের পিছনে পোড় খাওয়া কারণ হচ্ছে পৃথিবী কানা-হেলায় ঘোরা। ওই ২৩.৫ ডিগ্রি হেলে থাকা ছাড়া মিডনাইট সান টাইপ ব্যাপার হতই না! গ্রীষ্মকালে উত্তর/দক্ষিণ পোলার এলাকারা পুরো ভিজে যায় আলোয়। আরে, তামাশা দেখেন, মিডনাইট সান যখন দৌড়াচ্ছে, তখন শীতকালে ওখানে আবার পুরো অন্ধকার রাজত্ব করে, সূর্য গাধার মতো চুরি হয়ে যায়।
রাত না থাকা দেশগুলা—
উত্তরে: নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, গ্রিনল্যান্ড, ক্যানাডার এক্কেবারে স্টাইলিশ অংশ, রাশিয়ারও কয়েকটা।
দক্ষিণে: চিলি, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া (আবার পুরোটা না, কিছু জায়গা), নিউজিল্যান্ড, আরেকটু দরদ দিলে দক্ষিণ আফ্রিকার ছোট টুকরো অংশ।
এই মিডনাইট সান ব্যাপারটা নিয়ে ট্যুরিস্টদের তো উৎসাহের শেষ নেই। হ্যাঁ, অনেকে ইউনিক দৃশ্য বা ইন্সটাগ্রাম কব্জা করতে সেখানে গিয়ে ক্যামেরা বাগিয়ে পড়ে থাকে। এর দরুন লোকাল মানুষও রোজগার করে ইজি!
একটা কথা মাথায় রাখবেন—এই দিনরাতের মাতামাতি শুধু গ্রীষ্মকালেই, শীতকালে আবার পুরো উল্টো! তখন দিনের আলো দেখতে পাওয়ার জন্য মানুষ অর্ধেক সময় ভ্যাম্পায়ারের মতো বসে থাকে।
বিশেষ কথা বলতে গেলে, যারা ঘুম পাগল—রাত না হলে সমস্যা কিছু না, চোখে বোনা দিয়ে শর্টকাটে ঘুমিয়ে পড়ুন। পৃথিবীর এই কাণ্ডকারখানা শুনে অবাক হলেই হয়।
তো, আজ এতকথা বলার মূল কারণ—রাতহীন দেশ ব্যাপারটা বিরাট ইন্টারেস্টিং। যখন বুঝলেন, পৃথিবী শুধুই গোল নয়, একটু বাঁকা হয়ে জিন্দেগিকে কালারফুল করে তুলেছে, তখন তো মজা লাগে, দাদা/দিদি!
ধন্যবাদ, পড়লেন সময় নিয়ে—ভুল কিছু বললে থুড়ি! আগেই সাফাই দিয়ে রাখলাম!