জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় বা ঘরোয়া টোটকা হলো আপনি নিজেই ঘরে বসে, জ্বরের ওষুধ তৈরি করে জ্বর কমাতে পারবেন। আমরা আপনাদের জন্য যে বারটি উপায় জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় শেয়ার করব তা আমরা নিজেদের উপর প্রয়োগ করে অনেক ভালো ফলাফল পেয়েছি।
জ্বর হলো কোনো রোগ নয়, এটি অন্য কোন বড় রোগকে নির্দেশ করে। যখন আপনার শরীরের ইন্টিবডি দুর্বল হয়ে যাই বিশেষ করে তখন জ্বর হয়। এজন্য আমাদের জ্বর থেকে মুক্তি পেতে হলে শরীরের ইন্টিবডি তৈরি করতে হবে। এটি আপনি ঘরোয়া উপায়ে করতে পারবেন।
জ্বর কি?
জ্বর হল শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়া। বেশিরভাগ মানুষের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা প্রায় ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যদি আপনার তাপমাত্রা এই তাপমাত্রার চেয়ে ১ ডিগ্রি বা তার বেশি হয়, তাহলে আপনার জ্বর আছে।
বিভিন্ন কারণে জ্বর হতে পারে। এর মধ্যে কিছু কারণ হলো ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত হলে জ্বর হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত শরীর যদি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে না পারে তাহলে জ্বর হতে পারে। জ্বর কোন রোগ নয় তবে এটি অন্য রোগের লক্ষণ।
কখন চিকিৎসক দেখাতে হবে?
জ্বর কয়েক দিন থেকে এক সপ্তাহ বা তার বেশি সময় পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এটি সংক্রমণের ধরনের উপর নির্ভর করে। যদি আপনার জ্বর ৪৮ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয় বা যদি আপনার জ্বর সহ অন্যান্য লক্ষণ থাকে, যেমন মাথাব্যথা, শরীরে ব্যথা বা ক্লান্তি, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ।
শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে জ্বর হলে কখন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত
বয়স | তাপমাত্রা | অন্যান্য লক্ষণ |
---|---|---|
শিশু | মাথাব্যথা, শরীরে ব্যথা বা ক্লান্তি | |
শূন্য থেকে ৩ মাস | ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা তার বেশি | মাথাব্যথা, শরীরে ব্যথা বা ক্লান্তি |
৩ থেকে ৬ মাস | ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা তার বেশি এবং খিটখিটে | মাথাব্যথা, শরীরে ব্যথা বা ক্লান্তি |
৬ মাস থেকে ২ বছর | ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা তার বেশি এবং এক দিনের বেশি স্থায়ী, এ ছাড়া ফুসকুড়ি, কাশি বা ডায়রিয়া | মাথাব্যথা, শরীরে ব্যথা বা ক্লান্তি |
প্রাপ্তবয়স্ক | ||
১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা তার বেশি এবং তিনদিনের বেশি স্থায়ী | প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, ফুসকুড়ি, ঘন ঘন বমি, শ্বাসকষ্ট, বুকে বা পেটে ব্যথা ও খিঁচুনি |
বাচ্চার জ্বর কমানোর উপায়
শিশুদের শরীর প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় দ্রুত ঠান্ডা হয়ে যায়। তাই অতিরিক্ত জ্বর তাদের শরীরের জন্য বেশি বিপজ্জনক হতে পারে। জ্বর শিশুদের শরীরের তরল ক্ষয় করতে পারে, যা ডিহাইড্রেশন হতে পারে। এছাড়া, জ্বর শিশুদের শ্বাসকষ্ট বা খিঁচুনি হতে পারে।
জ্বর হলে কী করবেন?
জ্বর হলে প্রথমে প্রচুর পরিমাণে তরল পান করুন। হালকা পোশাক পরুন এবং ঠান্ডা জল বা ভেজা তোয়ালে দিয়ে শরীর মুছুন। যদি জ্বর কমে না যায়, তাহলে অ্যান্টিপাইরেটিক ওষুধ সেবন করতে পারেন। তবে, শিশুদের ক্ষেত্রে অ্যান্টিপাইরেটিক ওষুধ দেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
জ্বর হলে কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
উপরের টেবিলে দেওয়া নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন। যদি আপনার বা আপনার শিশুর জ্বর হলে উপরের নির্দেশাবলী অনুসরণ করার পরও জ্বর না কমে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যান।
জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার পান
জ্বর শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির একটি অবস্থা। জ্বর হলে শরীর ঘামতে থাকে, যাতে শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়। ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে তরল পদার্থ বের হয়ে যায়, যা ডিহাইড্রেশনের কারণ হতে পারে। তাই জ্বর হলে প্রচুর পরিমাণে পানি ও অন্যান্য তরল খাবার খাওয়া জরুরি।
জ্বর হলে নিম্নলিখিত তরল খাবার খাওয়া যেতে পারে:
- পানি
- ফলের রস
- লেবুর রস
- ডাবের পানি
- স্যুপ
শিশুদের ক্ষেত্রে জ্বর হলে পানি ও তরল খাবার খাওয়ানো আরও বেশি জরুরি। কারণ শিশুদের শরীরের ওজন কম হওয়ায় তারা সহজেই ডিহাইড্রেটেড হয়ে যেতে পারে।
জ্বর হলে পানি ও তরল খাবার খাওয়ার উপকারিতা
- ডিহাইড্রেশন রোধ করে
- শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে
- শরীরকে সুস্থ হতে সাহায্য করে
জ্বর হলে পানি ও তরল খাবার খাওয়ার নিয়ম
- জ্বর হলে প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খাওয়া উচিত।
- তরল খাবার ঘন ঘন ছোট ছোট নিতে হবে।
- তরল খাবার ঠান্ডা বা স্বাভাবিক তাপমাত্রায় খাওয়া যেতে পারে।
জ্বর হলে পানি ও তরল খাবার খাওয়ার কিছু টিপস
- জ্বর হলে শিশুদেরকে পানি বা অন্যান্য তরল খাবার পান করানোর জন্য উৎসাহিত করুন।
- শিশুদেরকে তরল খাবার খাওয়ানোর জন্য খেলনা বা অন্যান্য জিনিসের সাহায্য নিতে পারেন।
- শিশুদেরকে তরল খাবার খাওয়ানোর জন্য একটি ছোট কাপ বা গ্লাস ব্যবহার করুন।
জ্বর হলে পানি ও তরল খাবার খাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি ডিহাইড্রেশন রোধ করে এবং শরীরকে সুস্থ হতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুম প্রয়োজন
জ্বর শরীরের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার একটি প্রতিক্রিয়া। তাই জ্বর হলে শরীরকে বিশ্রাম দেওয়া জরুরি। বিশ্রাম দেওয়ার মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং সংক্রমণটি দ্রুত সেরে যায়।
জ্বর হলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি খেয়াল রাখুন:
- যতটা সম্ভব বিছানায় থাকুন।
- শারীরিক কার্যকলাপ এড়িয়ে চলুন।
- প্রতি রাতে আট থেকে নয় ঘণ্টা বা তার বেশি ঘুমের চেষ্টা করুন।
বিশ্রামের উপকারিতা
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- সংক্রমণটি দ্রুত সেরে যায়।
- ক্লান্তি এবং দুর্বলতা কমে যায়।
- শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়।
জ্বর হলে বিশ্রাম নেওয়ার কিছু টিপস
- হালকা গরম জলে গোসল করুন।
- ঠান্ডা তোয়ালে দিয়ে শরীর মুছুন।
- হালকা পোশাক পরুন।
- প্রচুর পরিমাণে তরল পান করুন।
জ্বর হলে বিশ্রাম নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি শরীরকে সুস্থ হতে সাহায্য করে।
হালকা আরামদায়ক পোশাক পড়া
জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে। তাই জ্বর হলে হালকা পোশাক পরা উচিত। হালকা পোশাক শরীর থেকে তাপ বের হতে দেয়, যা জ্বর কমাতে সাহায্য করে।
জ্বর হলে হালকা পোশাক পরার উপকারিতা
- শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
- ঘাম শুকানোর জন্য বাতাসের প্রবাহ বাড়ায়।
- আরামদায়ক অনুভূতি দেয়।
জ্বর হলে হালকা পোশাক পরার কিছু টিপস
- সুতি বা লিনেনের মতো হালকা এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের উপযোগী কাপড় পরুন।
- ঢিলেঢালা এবং আরামদায়ক পোশাক পরুন যা শরীরকে আটকে রাখবে না।
- পোশাকটি ভেজা হলে তা পরিবর্তন করুন।
শিশুদের ক্ষেত্রে জ্বর হলে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ শিশুদের শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই শিশুদেরকে হালকা এবং আরামদায়ক সুতির জামা পরান।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া
ভিটামিন সি হল একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরকে ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ফ্রি র্যাডিকেলগুলি অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণ হতে পারে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করতে পারে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমে যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত হয়।
হালকা গরম পানিতে লেবুর রস পান করলে জ্বরের পাশাপাশি সর্দি, ফ্লু এবং অন্যান্য রোগ কমাতে সহায়তা করে। লেবুর রসে ভিটামিন সি, অ্যাসকরবিক অ্যাসিড এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। হালকা গরম পানিতে লেবুর রস পান করলে শরীরের তাপমাত্রা কমে যায় এবং সর্দি, ফ্লু এবং অন্যান্য রোগের লক্ষণগুলি উপশম হয়।
সহজভাবে বললে, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ এবং হালকা গরম পানিতে লেবুর রস পান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং সর্দি, ফ্লু এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমে যায়।
এখানে কিছু ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা দেওয়া হল:
লেবু, কমলা, আম, কিউই, আপেল, ব্রোকলি, ক্যাপসিকাম, গোলমরিচ, টমেটো
আপনি যদি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চান তবে এই খাবারগুলি আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করুন।
উষ্ণ পানিতে গোসল
জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। হালকা গরম পানিতে গোসল করলে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা কমে যায়। এছাড়াও, হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করলে পেশী শিথিল হয় এবং শরীর প্রশমিত হয়। এটি মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয় এবং শক্তি সরবরাহ করে।
হালকা গরম পানিতে গোসলের উপকারিতা
- শরীরের তাপমাত্রা কমায়
- পেশী শিথিল করে
- শরীরকে প্রশমিত করে
- মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেয়
- শক্তি সরবরাহ করে
হালকা গরম পানিতে গোসলের নিয়ম
- গোসলের সময় পানি খুব গরম বা খুব ঠান্ডা হওয়া উচিত নয়।
- গোসলের সময় বেশিক্ষণ থাকা উচিত নয়।
- গোসলের পর ভালোভাবে শরীর মুছে নেওয়া উচিত।
হালকা গরম পানিতে গোসল শরীরের জন্য একটি উপকারী অভ্যাস। এটি শরীরের তাপমাত্রা কমাতে, পেশী শিথিল করতে, মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দিতে এবং শক্তি সরবরাহ করতে সাহায্য করে।
পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ
ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবার জ্বর কমাতে সাহায্য করে, ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হলে জ্বর সহ বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করা সহজ হয়।
মুরগি বা সবজির স্যুপ জ্বর কমাতে সাহায্য করে
মুরগি বা সবজির স্যুপ শরীরের তাপমাত্রা কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। স্যুপে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালোরি এবং অন্যান্য পুষ্টি থাকে যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়।
জ্বর কমানোর ঘরোয়া টোটকা
এই প্রবন্ধের মাধ্যমে
মাথায় পানিপট্টি দিন
জ্বর হলে বাড়িতে বসে নিজেই মাথায় পানিপট্টি দিন। একটুকরা কাপড় বা রোমাল পানিতে ভিজিয়ে কপালের উপর রাখুন। এটি মাঝেমধ্যে বার বার পনিতে দিয়ে তা থেকে সমান্য পানি চিপে ফেলে দিয়ে এটি করুন। আশা করি ভালো ফল পাবেন।
জ্বর কমাতে ঘরোয়া টোটকা নাম্বার দুইঃ তুলসি পাতার ব্যবহার
কিছু তুলসি পাতা পানির মধ্যে ধুয়ে নিন। এর পর পনির মধ্যে দিয়ে ফুটান অথাবা পনিতে দিয়ে জ্বালান। যখন ফুটানো বা জ্বালানো কাজ সম্পর্ন হবে, এটি ঠাণ্ডা করে এর পনিগুলো প্রতিদিন সকালে পান করুন। আশা করি ভালো ফল পাবেন।
মধু ও লেবুর রসের ব্যবহার
এক চামুচ মধু এবং একটি লেবু কেটে অর্ধে অংশটুকু থেকে রস বের করুন। এরপর এক গ্লাস পানিতে সামান্য গরম পানি নিয়ে নিন। এর পর মধু, লেবুর রস গরম পানিতে মিশিয়ে পান করুন। এশা করি গরম পানিতে লেবুর এবং মধু আপনার শরীরের ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে দিবে।
আদা ও মধু মধুর ব্যবহার
এক চামুচ আদা বাটা এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে নিন এরপর এর সাথে মধু মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার পান করুন। আরো ভালো ফল পেতে এর সাথে লেবুর রস মিসাতে পারেন। আশাকরি ভালো ফল পাবেন।
রসুনের ব্যবহার
এক কোয়া রসুন কচি, কচি করে কেটে বা বেটে গরম পানির মধ্যে দশ থেকে বার মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এরপর কিছুখন পরে সেই পানি পান করুন আশা করি অনেক উপকার হবে। অথবা রসুন বাটার সাথে মধু মিশিয়ে সেটি খান আশা করি উপাকার পাবেন।
কুসুম গরম পানিতে গোসল
যেহেতু জ্বর হলে আমাদের শরীলের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। সেজন্য শরীরে শীত শীত ভাব হয়। তাই যখন আপনার জ্বর ১০০ বেশি ডিগ্রী হবে, তখন আপনি হালকা কুসুম গরম পানিতে গোসল করতে পারেন। আশা করি ভালো ফল পাবেন।
মধু ও তুলসিপাতার ব্যবহার
জ্বর এবং কাশির জন্য মধু এবং তুলসি পাতা অনেক উপাকারি। যখন আপনার জ্বর এবং কাশি উভয় হবে, তখন তুলসি পাতা বেটে তা থেকে রস বের করে এর সাথে মধু মিশিয়ে খান। এটি পরিক্ষা করে অনেক উপাকার হয়েছে।
আদা ও চা এর ব্যবহার
আদা এবং চা সম্পূর্ন রুপে চা তৈরির জন্য ফুটন্ত পানিতে চিনি দিয়ে ফোটান। চিনি মিশে গেলে চা দিয়ে ফোটাতে হবে। এরপর এতে আদার কুচি বেটে মেশান। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিন চা। আশা করি ভালো ফল পাবেন।
বাচ্চাদের জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
তরল খাবার
জ্বর হলে আমাদের সবচেয়ে বেশী সমস্যা হয় খেতে গেলে অর্থাৎ আমরা কোণো কিছু খেতে পারি না। এজন্য আমাদের প্রয়োজন তরল খাবার খাওয়া। কারন শরীর অনেক সময় ঘেমে থাকে। এজন্য আপনি স্যালায়ন, ডাবের পানি, মিশ্রি, গ্লোকোজ খেতে পারেন।
বিশ্রাম
জ্বর হলে আমাদেরকে অবশ্যই সকল কাজ ছেড়ে বিশ্রামে থাকতে হবে।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার
জ্বর হলে আমাদের এন্টীবডি নষ্ট হয়ে জাই। শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের অভাব হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। এজন্য আমদের ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যে সকল খাবারে থাকে প্রচুর ভিটামিন এ বি সি ইত্যাদি।
ফল এর ব্যবহার
জ্বর থেকে দ্রুত মুক্তি পাবার একটাই উপায় হলো আমাদের শরিরের এণ্টিবডি তৈরি কারা। এজন্য আমাদের বেশী বেশী ভাটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। বেশি বেশি লেবু জাতীয় ফল যেমনঃ লেবু, বাদামি লেবু, কোমলা লেবু, মালটা ইত্যাদি।
জ্বর কমানোর ঘরোয়া টিপস এক নজরে
নীচের সারণীতে তরল খাবারের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে যা শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক করতে এবং হজম প্রক্রিয়া সহজ করতে জ্বরের সময় খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। জ্বরের সময় ভাজা, শক্ত বা কাঁচা খাবার, বাইরের খাবার, দুধ চা, কোমল পানীয় ইত্যাদি পরিহার করা জরুরি।
তরল খাদ্য | সুবিধা |
ফলের রস | ঘরে তৈরি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ তাজা ফলের রস যেমন কমলা, মাল্টা, জাম্বুরা, সবুজ আপেলের রস এবং আনারসের রস (চিনি ছাড়া) জ্বরের সংক্রমণ দ্রুত কমাতে সাহায্য করে। |
চিকেন স্যুপ | প্রোটিন এবং ক্যালোরি সরবরাহ করে এবং ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। স্যুপে শাকসবজি যোগ করলে ভিটামিন, মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। চিকেন-ভেজিটেবল স্যুপও জ্বর-পরবর্তী দুর্বলতা কমাতে সাহায্য করে। |
চা | মাসালা চা, আদা চা এবং যেকোন ভেষজ চা তাদের অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যের কারণে উপকারী। চায়ে লেবু, মধু, তুলসি পাতা, পুদিনা পাতা এবং লবঙ্গ যোগ করলে সর্দি-কাশি কমাতে এবং স্বাদ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। |
মিল্কশেক | ওটস, কিশমিশ, খেজুর, বাদাম, কলা, চিনাবাদাম মাখন ইত্যাদি যোগ করা হলে উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত তরল হতে পারে। ডায়রিয়ার লক্ষণগুলির সাথে জ্বর থাকলে সুপারিশ করা হয় না। |
ডাবের পানি | জ্বরের সময় শরীরে যে ডিহাইড্রেশন এবং ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয় তা পূরণ করতে ডাবের পানির বিকল্প নেই। |
পাতলা সুজি | দুধের সাথে বা পাতলা সুজি বা দুধের সাথে সাগু খেতে সহজ, হজমযোগ্য এবং উচ্চ ক্যালরি। মধ্যবর্তী খাবারের সময় দিলে রোগী যথেষ্ট শক্তি পাবে। |
জাউ ভাত | জাউ ভাত সহজে হজমযোগ্য এবং খেতে সহজ। পাতলা পেঁপে-মুরগির ঝোল সবচেয়ে ভালো পরিবেশন করা হয় জাউ ভাতের সাথে। |
ডিম | সেদ্ধ ডিম জ্বরের সময় প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। দুধ, পনির এবং মাশরুমের সাথে স্ক্র্যাম্বল করা ডিমও এই সময়ে সুস্বাদু। ডিমের পুডিংও পরিবেশন করা যায়। |
পাতলা খিচুড়ি | বিভিন্ন সবজি ও মুরগির মাংস দিয়ে রান্না করা পাতলা খিচুড়ি সহজেই ক্যালরি, প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণ করে এবং দুর্বলতা দূর করে। |
প্রোবায়োটিকস | টক দই প্রোবায়োটিকের একটি ভালো উৎস, যা হজমে সাহায্য করে। টক দই মাঠা বা লাচিও জ্বরের সময় ক্ষুধা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। |
আরো পড়ুনঃ
আমাদের এই প্রবন্ধের শেষ কথাঃ আপনি আমরা যে সকল তথ্য আমাদের প্রবন্ধে উল্লেখ করেছি সেগুলো আমরা নিজেরা নিজদের উপর প্রয়োগ করে ভালো ফল পেয়েছি। এজন্য আমরা মনে করি জদি আপনি এই প্রবন্ধটি পড়েন তাহলে জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় এর সঠিক দিকগুলো জানতে পেরেছেন।
Faq:
জ্বর কমানোর দোয়া কি?
জ্বর কমানোর দোয়া হলো 'বিসমিল্লাহিল কাবির, আউজুবিল্লাহিল আজিমি মিন শাররি কুল্লি ইরকিন না'আর ওয়া মিন শাররি হাররিন নার। '
জ্বর কমানোর ওষুধ কী কী?
জ্বর কমানোর ওষুধ হলো প্যারাসিটামলজাতীয় ওষুধ। যেমন- নাপা, নাপা এক্সটা, প্যারাসিটামল এক্সটা, ফাস্ট ইত্যাদি।