বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য – বিদায় বক্তব্য উপস্থাপন ও লেখার নিয়ম

বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য (bidai onusthan er boktobbo) – বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য দেয়ার প্রয়োজন পরে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় অথবা কর্মক্ষেত্রে বিদায় অনুষ্ঠানের দিন। কিভাবে আপনার বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য সুন্দর ও মার্জিত ভাষায় উপস্থাপন করবেন, সে বিষয়ে আজ কথা বলব,

বিদায় অনুষ্ঠান একটি বিদ্যাপীঠের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা তাদের বিদ্যাপীঠের সাথে শেষবারের মতো বিচ্ছেদ ঘোষণা করে। তাই এই অনুষ্ঠানে একটি সুন্দর ও অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য প্রদান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অনেকেরই জানা নেই কিভাবে বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য প্রদান করতে হয় তা আমাদের । কথাগুলো বলতে হবে বক্তব্য দিতে গিয়ে সেটি আমরা অনেকেই জানিনা।

বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য

লেখা ১ঃ

জীবনের পথে আমরা সবাই পথিক। সময়ের সাথে সাথে আমরা এগিয়ে যাই। আমাদের চলার পথে আমরা অনেক সুখ-দুঃখের স্মৃতি জমা করি। এই বিদ্যালয়েও আমাদের অনেক স্মৃতি রয়েছে। আমরা এখানে এক পরিবারের মতো ছিলাম। শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই নয়, এখানে আমরা অনেক কিছু শিখেছি। এখানে বিতর্ক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা কথা বলার দক্ষতা অর্জন করেছি। শরীর চর্চা ও খেলাধুলার মাধ্যমে আমরা শারীরিকভাবে সুস্থ ও সবল হয়েছি। তাই এই বিদ্যালয়ের সুনাম দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। অভিভাবকরা চান তাদের সন্তানরা এমন বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে সুশিক্ষিত হোক।

লেখা ২ঃ

প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ, আপনাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আপনারা আমাদের শিখিয়েছেন কিভাবে প্রকৃত মানুষ হওয়া যায়। বইয়ের বিদ্যা ছাড়াও এই পৃথিবীটাই এক বিরাট পাঠশালা। আপনাদের কাছে আমরা অনেক আদর পেয়েছি। কখনো কখনো আপনাদের সাথে বেয়াদবি করে ফেলেছি। এ জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। আপনাদের কাছে আমরা নিজের ছেলেমেয়ের মতোই ভালোবাসা পেয়েছি।

লেখা ৩ঃ

প্রিয় অভিভাবকবৃন্দ, আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া আমরা এ পর্যন্ত আসতে পারতাম না। শিক্ষকদের পাশাপাশি আপনাদেরও দেশ ও জাতি গঠনে অবদান রয়েছে। আপনাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য যে কষ্ট করেছেন, তার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।

লেখা ৪ঃ

প্রিয় সহপাঠী বন্ধুগণ, আমরা বিদ্যালয়ের বেশিরভাগ সময় তোমাদের সাথে কাটিয়েছি। তোমাদের সাথে আমরা অনেক আনন্দ করেছি। একজন আরেকজনের বিপদে আমরা এগিয়ে এসেছি। আজ আমাদের বিদায়। তবে এই বিদায় শেষ বিদায় নয়। আবার আমরা একদিন দেখা করবো। সেদিন আমরা অনেক গল্প করবো।

লেখা ৫ঃ

প্রিয় অগ্রজগণ, আপনাদের কাছ থেকে আমরা অনেক দিকনির্দেশনা পেয়েছি। আপনাদের স্নেহ ও ভালোবাসা আমাদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান। আমরা আপনাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।

লেখা ৬ঃ

প্রিয় অনুজগণ, শিক্ষকরা আমাদের গুরুজন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। শিক্ষকদের সাথে কোন অন্যায় বা বেয়াদবি করা যাবে না। আজকাল অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা লাঞ্ছিত ও নিপীড়িত হন। এর কারণ শিক্ষার্থীদের নৈতিক স্খলন। শিক্ষকদের সাথে কোন অন্যায় হলে তা প্রতিরোধ করতে হবে।

লেখা ৭ঃ

আমি আমার বক্তব্য আর দীর্ঘায়িত করতে চাই না। আজ আমরা অশ্রুসিক্ত নয়নে বিদায় নিচ্ছি। আমাদের জন্য দোয়া করবেন, আমরা যেন অনেক দূর যেতে পারি। দেশ ও মানুষের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখতে পারি। একটা সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ কামনা করে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

You can also Read:

এসএসসি বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।

আজ আমরা এক বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মন্ডলী, অভিভাবকবৃন্দ এবং আমার সামনে উপস্থিত সকল ছাত্র-ছাত্রীদের আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

বিদায় শব্দটি খুবই কষ্টের। কিন্তু আমাদেরকে বিদায় নিতে হবে। কারণ এটাই প্রকৃতির নিয়ম। যেকোনো কিছুর শুরু যেমন আছে, শেষও আছে। আর শেষের মধ্যে দিয়ে বিদায়ের মতো ভারাক্রান্ত মুহূর্ত আসে।

আমি অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলছি, এই বিদ্যালয় থেকে বিদায় নেওয়া সম্ভব, কিন্তু চির বিদায় নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ এই বিদ্যালয়ে আমি দীর্ঘ ১০ বছর অধ্যায়ন করেছি। যেখানে আমার শৈশব থেকে কৈশোর বয়সের সকল স্মৃতি জড়িত রয়েছে। শিক্ষকদের সাথে যেসকল সুন্দর মুহূর্ত রয়েছে তা কখনো ভুলবার নয়।

কারণ আমি এই শিক্ষকদের হাত ধরে আজকের এখানে আসতে পেরেছি। তাই আমি সকল শিক্ষকদের কাছে চির কৃতজ্ঞ।

আমাদের সকলের ইচ্ছা না থাকলেও আজকে আমাদেরকে একটি অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বিদায় নিতে হচ্ছে। এই বিদায়ের মধ্য দিয়ে আমাদের জীবনের শিক্ষাঙ্গনের একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে।

সকল গুরুজনদের কাছে এই বিদায় সমাপ্তির সাথে নতুন শিক্ষাঙ্গনে পা রাখার জন্য দোয়া চাইছি। যাতে করে আমরা সঠিক জ্ঞান এবং শিক্ষা অর্জন করে আমাদের দেশের উন্নতি করতে পারি এবং একটি সুন্দর এবং সুস্থ জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে পারি।

তাছাড়াও এখানে অনেক শাসন বারণের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। যা আমাদের কাছে সাময়িকভাবে বিরক্ত মনে হলেও, শেষ পর্যন্ত আমরা বুঝতে পেরেছি এটি আমাদের জীবনের প্রয়োজন ছিল।

আমরা শিক্ষার্থীরা যদি শিক্ষকদের মনে আচরণগতভাবে ভুল করে কোন কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে শিক্ষকবৃন্দ যেন আমাদেরকে তাদের সন্তান মনে করে তা ক্ষমা করে দেন।

আশা করি আমরা যেখানেই থাকি, আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষা ও আদর্শকে মনে রাখব। এবং আমাদের জীবনে সফলতা অর্জনের মাধ্যমে আমাদের বিদ্যালয় ও দেশকে গৌরবময় করে তুলব।

আমার অনুগামী ভাই ও বোনেরা,

আমরা দীর্ঘ ১০ বছর ধরে একসাথে ছিলাম। এই সময়ে আমরা এক পরিবারের মতো ছিলাম। আমরা অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছি।

আমরা অনেক সময় তোমাদের শাসন করেছি। কিন্তু আমাদের শাসনটা ভালোবাসার শাসন ছিল। আমরা চাইছিলাম তোমরা ভালো মানুষ হও।

আমরা চাই, তোমরা আমাদের জন্য দোয়া করো। আমরা যেন ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারি। আমরা যেন এই বিদ্যালয়ের সুনাম বয়ে আনতে পারি।

আমরা চাই, তোমরা তোমাদের পরিবারের স্বপ্ন পূরণ করতে পারো। আমরা তোমাদের জন্য শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

প্রত্যেক পিতামাতা তাদের সন্তানকে পারিবারিক মূল্যবোধ ও আচরণগত বিধির মধ্যে রাখেন। এই মূল্যবোধগুলো সন্তানকে জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে।

আমরা চাই, তোমরা তোমাদের জীবনের লক্ষ্য অর্জন করতে পারো। আমরা চাই, তোমরা তোমাদের পিতামাতার স্বপ্ন পূরণ করতে পারো।

কিন্তু অনেক সময় পারিবারিক সমস্যা ও আর্থিক সমস্যার কারণে অনেক শিক্ষার্থী অকালে ঝরে পড়ে। আমরা চাই, এই সমস্যাগুলো সমাধান করা হোক।

শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষিত জাতি উন্নত জাতি। আমরা চাই, তোমরা ভালো মানুষ হও। আমরা চাই, তোমরা ভালো শিক্ষিত হও।

আজকের বিদায় অনুষ্ঠানে আগত সকল অভিভাবককে বলছি, আপনারা আপনাদের সন্তানদের জন্য দোয়া করুন। আপনারা আপনাদের সন্তানদেরকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুন।

একান্ত বিদারী এই মুহূর্তে আর কিছু বলতে চাই না। শুধুমাত্র উপস্থিত সকলের নেক হায়াত কামনা করছি। সকল ছাত্র-ছাত্রীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি। এবং সকলের কাছে আমাদের জন্য দোয়া চাইছি।

আবারও সকলকে ধন্যবাদ।

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।

You can also Read:

কলেজের বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

প্রথমে আমাদের শিক্ষক মহাশয় এবং সকল শিক্ষকমন্ডলীকে আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই। আমার সহপাঠী এবং ছোট ভাই ও বোনদের জন্য রয়েছে ভালোবাসা এবং স্নেহ।

আজকের এই বিদায়ের দিন আমার হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে আছে। বিদায় নিতে চাই না, কিন্তু বিদায় নিতে হচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে চলে যেতে হবে এই ভেবেই আমার হৃদয় বারবার আবেগপ্রবণ হয়ে যাচ্ছে।

আমরা কেউই স্মৃতিজড়িত কলেজের দিনগুলো ছেড়ে যেতে চাই না। তবুও শিক্ষা জীবনের নিয়ম অনুসারে আমাদেরকে ছেড়ে যেতে হবে।

আমরা যাতে উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনতে পারি, তার জন্য সকল অভিভাবক এবং শিক্ষক বৃন্দের কাছে আমাদের জন্য দোয়া কামনা করছি।

সকল শিক্ষকবৃন্দ আমাদেরকে তাদের জ্ঞান ভান্ডার থেকে জ্ঞান দান করেছেন এবং আমাদেরকে একটি জাতির মেরুদন্ড হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। তাদের কাছে আমরা সকল শিক্ষার্থীরা চির কৃতজ্ঞ।

আমরা যাতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর জ্ঞান অর্জন করে আমাদের দেশ এবং জাতি গঠনের ভূমিকা পালন করতে পারি এবং দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারি পৃথিবীর বুকে, সেই দোয়া চাইছি সকল শিক্ষকবৃন্দের কাছে।

আমার জানামতে আমি কখনও কোনও শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণ করিনি। তবুও অযাচিত কারণে যদি আমার পক্ষ হতে কোন শিক্ষক কষ্ট পেয়ে থাকেন, তাহলে আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন। কারণ আমরা আপনাদের ভালোবাসা এবং আপনাদের জ্ঞানের আলোয় নিজেদেরকে আলোকিত করতে চাই।

সম্মানিত অভিভাবকদের কাছে আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কারণ তারা যদি আমাদেরকে নিয়ে স্বপ্ন না দেখতেন, তাহলে আজ আমরা এই জ্ঞান অর্জন করতে পারতাম না। আপনাদের কাছে আমাদের জন্য দোয়া এবং শুভকামনা চাইছি। যাতে করে আমরা আপনাদের স্বপ্নপূরণ করতে পারি এবং সেইসাথে আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরি করতে পারি।

স্নেহের ছোট ভাই ও বোনেরা, তোমাদের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে রয়েছে অনেক শুভকামনা। আমাদের পক্ষ হতে যদি তোমরা কখনো কোনো কষ্ট পেয়ে থাকো, তাহলে আমাদেরকে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখো এবং আমাদের দেশে নির্দেশগুলো তোমরা পালন করো যাতে করে তোমাদের ভবিষ্যত আমাদের মত করে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

আমাদের পক্ষ হতে তোমাদের কাছে একটি চাওয়া সেটি হচ্ছে, তোমরা শিক্ষক বৃন্দের সাথে কোন রকম বেয়াদবি করবে না এবং শিক্ষকদের সাথে ভালো আচরণ করবে। শিক্ষকরা তোমাদেরকে যে শিক্ষা দান করবে তা আহরণ করার চেষ্টা করবে এবং বাস্তবে তা ভালো কাজে প্রয়োগ করবে।

পরিশেষে সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ এবং অভিভাবক হিসাবে ছোট ভাই ও বোনদের পক্ষ হতে ক্ষমা এবং দোয়া প্রার্থনা করছি। মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাদের সকলকে নেক হায়াত দান করুক।

শিক্ষকের বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।

সম্মানিত অধ্যক্ষ এবং অন্যান্য সকল শিক্ষকবৃন্দ, বিদায় শিক্ষক মহোদয়ের সহকারি, অত্র প্রতিষ্ঠানের সকল ছাত্র-ছাত্রী ভাই-বোনদেরকে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

আজকের এই বিদায়ের দিন আমাদের প্রতিষ্ঠানে এক বিষণ্নতা বিরাজ করছে। আমাদের বিদায় শিক্ষক মহোদয়ের বিদায়ের কারণে আমরা অনেক কষ্ট পেয়েছি। তিনি আমাদেরকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন। তার জ্ঞানের আলোয় আমরা আলোকিত হয়েছি। তার বিদায়ের কারণে আমরা সেই আলো হারিয়ে ফেলছি।

আমরা বিদায় শিক্ষক মহোদয়ের সান্নিধ্য পেয়ে নিজেদেরকে ধন্য মনে করছি। তিনি আমাদের জন্য একজন আদর্শ শিক্ষক ছিলেন। তিনি ছিলেন কর্মঠ, উদারচিত্ত, অকৃতিম, প্রজ্ঞাবান। আমরা তার আদর্শে আদর্শিত হয়ে নিজেদেরকে দেশ ও সমাজের সুষ্ঠুভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

বিদায় শিক্ষক মহোদয়, আপনি শুধু আমাদের শিক্ষক নন, আপনি আমাদের জীবনের নীতি ও আদর্শের পথপ্রদর্শক। আপনার ক্লান্তিহীন জ্ঞানচর্চা আমাদেরকে উদ্ভাসিত করেছে। আপনার জ্ঞানের আলোয় আমরা নিজেদেরকে আলোকিত করতে পেরে পৃথিবীর ধন্য মনে করছি।

নিয়ম রক্ষার্থে আজ আমরা আপনাকে বিদায় জানাতে বাধ্য হয়েছি। আমরা আশা করি, আপনি আমাদের অন্তরের শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন গ্রহণ করবেন। আমাদের অযাচিতভাবে যদি আমরা আপনার আচরণগতভাবে কোন কষ্ট দিয়ে থাকি, তাহলে আমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আমরা আপনার কাছে আমাদের ভুলত্রুটি মার্জিত করার জন্য এবং আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য সুখী এবং সমৃদ্ধময় জীবন কামনা করার জন্য দোয়া চাই।

আমাদের সকলের পক্ষ থেকে আপনার জন্য ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, সুস্থ সুন্দর জীবন এবং মহান আল্লাহ তাআলা আপনাকে যেন নেক হায়াত দান করেন সেই কামনা রইল।

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। জাজাকাল্লাহ খাইরান।

সহকর্মীর বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য

সবাইকে আসসালামু আলাইকুম।

আজ আমাদের প্রিয় সহকর্মী [সহকর্মীর নাম] এর বিদায়ের দিন। তিনি আমাদের প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে এসেছেন। তিনি একজন আদর্শ সহকর্মী, বন্ধু এবং একজন ভালো মানুষ।

তার বিদায়ের কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠানের উষ্ণতা, প্রফুল্লতা এবং পারস্পরিক সহযোগিতা হারিয়ে যাবে। তিনি সবসময় আমাদেরকে সাহায্য করেছেন, উৎসাহিত করেছেন এবং সমস্যার সমাধানে সহযোগিতা করেছেন। তিনি আমাদের জন্য একজন শিক্ষকের মতো ছিলেন।

তিনি একজন বন্ধুসুলভ সহকর্মীও ছিলেন। আমাদের যেকোনো বিপদে তিনি আমাদের পাশে থেকেছেন। তিনি আমাদের মানসিক শান্তি দিয়েছেন।

আমরা তার বিদায়ের কথা শুনে খুবই দুঃখিত। কিন্তু আমরা জানি যে, এই প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুসারে তাকে অবসর গ্রহণ করতে হবে। আমরা তার কাছে ক্ষমা চাই যে, আমরা যদি কখনো তার সাথে কোন ভুল করে থাকি।

আমরা তাকে অনেক ভালোবাসি এবং শ্রদ্ধা করি। আমরা তার জন্য সবসময় শুভকামনা রইলো।

আল্লাহ যেন তাকে নেক হায়াত দান করেন এবং তার অবসর জীবন সুন্দর ও সুখকর করে দেন।

আসসালামু আলাইকুম।

বিদায়ী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষকের বক্তব্য

সবাইকে আসসালামু আলাইকুম।

আজ আমাদের বিদ্যালয়ের প্রিয় শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সম্মানিত প্রধান শিক্ষক মহাদয়, সহকর্মী শিক্ষক-শিক্ষিকা, অশিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ এবং আমার প্রিয় শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।

বিদায়ের এই মুহূর্তে আমি খুবই দুঃখিত। কারণ আমি আপনাদেরকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলতে যাচ্ছি। আপনারা এই বিদ্যালয়ে অনেক বছর ধরে পড়াশোনা করেছেন। আপনারা এই বিদ্যালয়ের প্রতিটা আনাচে-কানাচে আপনারা ছড়িয়ে আছেন। আপনারা এই বিদ্যালয়ের একটি অংশ হয়ে থাকবেন।

আমি জানি, এই বিদায় আপনাদের জন্য খুবই কষ্টের। কিন্তু জীবনে সবকিছুরই একটা শেষ আছে। এই বিদায়ে আপনারা নতুন জীবনের দিকে যাত্রা শুরু করছেন। তাই আমি আপনাদেরকে বলব, এই বিদায়কে কষ্টের নয়, আনন্দের মনে করুন। কারণ এই বিদায় আপনাদের নতুন জীবনের শুরু।

আমি আপনাদেরকে কিছু পরামর্শ দিতে চাই।

সবসময় নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলুন।
সৎ এবং ভালো মানুষ হন।
আপনার লক্ষ্য অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করুন।
আপনার পরিবার এবং শিক্ষকদের সম্মান করুন।
আমি আশা করি, আপনারা আমার পরামর্শগুলো মেনে চলবেন।

আপনারা এই দেশ এবং জাতির ভবিষ্যৎ। আপনারাই এই দেশের নেতৃত্ব দেবেন। তাই আমি আপনাদের জন্য দোয়া করি। আপনারা যেন সফল হয়ে আমাদের বিদ্যালয়ের সুনাম বয়ে আনেন।

আসসালামু আলাইকুম।

বিদায়ী সংক্ষিপ্ত বক্তব্য

সবাইকে আসসালামু আলাইকুম।

আজ আমাদের বিদায়ের দিন। এই বিদায়ের মুহূর্তে আমি খুবই দুঃখিত। কারণ আমি আপনাদেরকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলতে যাচ্ছি।

আমরা এই বিদ্যালয়ে অনেক বছর ধরে পড়াশোনা করেছি। আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা আমাদেরকে অনেক ভালোবাসা দিয়েছেন। তারা আমাদেরকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন। আমরা তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ।

আমরা আজ এই বিদ্যালয় থেকে বিদায় নিয়ে নতুন জীবনের দিকে যাত্রা শুরু করছি। আমরা চাই, আমাদের জীবনে সাফল্য আসুক। আমরা চাই, আমরা দেশ ও জাতির জন্য কাজ করি।

আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা আমাদেরকে অনেক শাসন করেছেন। কিন্তু আমরা এখন বুঝতে পারছি, তাদের শাসন আমাদের জন্য কল্যাণকর ছিল।

আমাদের সহপাঠীরা, আমরা অনেক বছর ধরে একসাথে পড়াশোনা করেছি। আমরা একে অপরের খুব কাছের হয়ে গেছি। আজ আমাদের বিদায়ের মুহূর্তে আমি বলতে চাই, এই বিদায় শুধুমাত্র স্থান পরিবর্তনের জন্য। আমরা চিরদিন একসাথে থাকব।

আমাদের ছোট ভাই-বোনেরা, আমরা আপনাদেরকে অনেক ভালোবাসি। আপনাদেরকে ছেড়ে যাওয়ার জন্য মন চাইছে না। কিন্তু জীবনের উদ্দেশ্যে আমাদের বিদায় নিতে হচ্ছে। আমরা আপনাদের জন্য দোয়া করি।

বিদায়ী মুহূর্তে আর কিছু বলতে চাই না। আমি এই বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা, সভাপতি, অতিথি এবং আমার প্রাণপ্রিয় ভাই-বোনদের জন্য শুভকামনা রইল।

আসসালামু আলাইকুম।

বিদায় বক্তব্য উপস্থাপন

ধাপ ১: শুভেচ্ছা বক্তব্য

আসসালামু আলাইকুম,

প্রিয় প্রধান মেহমান, সভাপতি, সকল শিক্ষক, অভিভাবক, সহপাঠী, উপস্থিত সকল অগ্রজ,

আজকের এই বিদায় অনুষ্ঠানে আপনাদের সবাইকে আমার জানাই আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা।

আমি এই বিদায় বক্তব্যের সুযোগ পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত। এই প্রতিষ্ঠানে আমার ছোটবেলা থেকে বড় হয়ে ওঠা। এই প্রতিষ্ঠানে আমি অনেক কিছু শিখেছি, অনেক স্মৃতি জমা করেছি। আজ আমি এই প্রতিষ্ঠানকে বিদায় জানাতে এসেছি।

ধাপ ২: প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে

আমি এই প্রতিষ্ঠানে এসে অনেক কিছু শিখেছি। এখানে আমি ভালো মানুষ হতে শিখেছি। এখানে আমি দেশপ্রেম, সততা, নৈতিকতা, সহনশীলতা ইত্যাদি গুণাবলী অর্জন করেছি।

আমি এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান খুবই ভালো বলে মনে করি। এখানে শিক্ষকরা খুবই দক্ষ ও অভিজ্ঞ। তারা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ভালোভাবে শিক্ষাদান করেন।

আমি মনে করি, এই প্রতিষ্ঠান আপনার সন্তানের জন্য উপযুক্ত। এখানে আপনার সন্তান ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে।

ধাপ ৩: শিক্ষকদের সম্পর্কে

আমি আমার শিক্ষকদের কাছে অনেক ঋণী। তারা আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন। তারা আমাকে ভালো মানুষ হতে সাহায্য করেছেন।

আমার শিক্ষকরা খুবই আন্তরিক ও সহযোগিতাশীল। তারা ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সবসময় উৎসাহিত করেন।

আমি আমার শিক্ষকদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। যদি অজান্তে কোন ভুল হয়ে থাকে।

আমি আমার শিক্ষকদের দীর্ঘায়ু কামনা করি।

ধাপ ৪: অভিভাবকদের সম্পর্কে

আমার অভিভাবকদের কাছেও আমি অনেক ঋণী। তারা আমাকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে অনেক পরিশ্রম করেছেন।

আমার অভিভাবকরা সবসময় আমার পাশে ছিলেন। তারা আমাকে কখনোই হতাশ করেননি।

আমি আমার অভিভাবকদের সুস্বাস্থ্য কামনা করি।

ধাপ ৫: সহপাঠীদের সম্পর্কে

আমার সহপাঠীদের সাথে কাটানো সময়গুলো আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময় ছিল। আমরা বিপদে-আপদে একে অপরের পাশে ছিলাম। আমরা অনেক সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছি।

আমি আমার সহপাঠীদের সাথে সবসময় যোগাযোগ রাখব।

ধাপ ৬: অনুজদের সম্পর্কে

আমি আমার অনুজদেরকে কিছু উপদেশ দিতে চাই।

ভালোভাবে পড়াশোনা করো।
শিক্ষকদের দিকনির্দেশনা মেনে চলো।
বাবা-মার সাথে ভালো ব্যবহার করো।
দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করো।

উপসংহার

আমি আশা করি, আমি আমার বিদায় বক্তব্য দিয়ে আপনাদের সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পেরেছি।

আমি আবারও আপনাদের সবাইকে আমার আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা জানাই।

বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্যতে যা করা অনুচিত

  • উচ্চস্বরে বক্তব্য দেওয়া যাবে না।
  • কাউকে ব্যক্তিগত আঘাত করে কোন কথা বলা যাবে না।
  • নির্দিষ্ট কারো প্রশংসা করে বক্তব্য দেওয়া উচিত নয়।
  • উপস্থিত সকল শিক্ষকের মধ্যে কিছু শিক্ষক বা কিছু সংখ্যক মেহমানদের প্রশংসা করা যাবেনা।
  • প্রতিষ্ঠান বা কোনো শিক্ষকের মন্দ দিক বলা উচিত না।
  • বিদায়ী বক্তব্যে রাজনৈতিক বিষয় তুলে ধরা উচিত নয়।

বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য লেখার নিয়ম

বিদায় অনুষ্ঠানে বক্তব্যের ধাপ-ধাপ দিকনির্দেশনা

ধাপ ১: শুরুতে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বলে শুরু করুন।
সকল উপস্থিত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে সালাম জানান।
আজকের এই বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে গর্বিত বা আনন্দিত বলে জানান।
আপনাকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান।

ধাপ ২: প্রতিষ্ঠানের প্রশংসা ও সহকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা

যে প্রতিষ্ঠানে আপনি এতদিন কর্মরত বা শিক্ষাজীবন পার করেছেন তার প্রশংসা করুন।
প্রতিষ্ঠানের সুন্দর পরিবেশ, দক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকা, সহকর্মীদের সহযোগিতা ইত্যাদির কথা উল্লেখ করুন।
আপনার সহকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

ধাপ ৩: অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা থেকে অনুপ্রেরণা

আপনার এতদিনের চলাফেরার মধ্যে যে অভিজ্ঞতা বা শিক্ষা আপনি অর্জন করেছেন তা ভাগ করে নিন।
আপনার কথার মাধ্যমে সকলকে অনুপ্রাণিত করুন।
কোনো সমস্যায় পড়লে তা কীভাবে সমাধান করেছেন তা বলুন।
প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়েও নিজেকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন তার কথা বলুন।
সকল পরিস্থিতির মাধ্যমে আপনি কিভাবে নতুন কিছু শিখেছেন তা বলুন।

ধাপ ৪: বিদায় ও ক্ষমাপ্রার্থীতা

এই পৃথিবীর মধ্যে সকল কিছু ক্ষণস্থায়ী বলে উল্লেখ করুন।
ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বিদায় নিতে হচ্ছে বলে জানান।
আপনার এতোদিনের চলাফেরায় কখনো কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থীতা জানান।
সকলের দীর্ঘায়ু কামনা করুন।

উদাহরণ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

প্রিয় প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, অভিভাবকবৃন্দ, সহপাঠীবৃন্দ, আপনাদের সকলকে আমার সালাম।

আজকের এই বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পেরে আমি অত্যন্ত গর্বিত ও আনন্দিত। আমাকে এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আপনাদের সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।

আমি এই স্কুলে দীর্ঘ ৫ বছর যাবত শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করেছি। এই স্কুলে আমি অনেক কিছু শিখেছি। শিক্ষকদের কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন করেছি, সহপাঠীদের কাছ থেকে বন্ধুত্ব শিখেছি। এই স্কুলের সুন্দর পরিবেশে আমি অনেক সুখী সময় কাটিয়েছি।

আমার সহকর্মীরা সবসময় আমার পাশে ছিল। তারা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

আমি এই স্কুলে অনেক ভালো ভালো স্মৃতি তৈরি করেছি। এই স্মৃতিগুলো আমার সারাজীবন মনে থাকবে।

আজ এই ভারাক্রান্ত মন নিয়ে এই বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছি। আমার এতোদিনের চলাফেরায় কখনো কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থী।

সকলের দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

ধন্যবাদ।

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Prove your humanity: 9   +   4   =  

You cannot copy content of this page

Scroll to Top