এমপক্স সংকট: একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে এমপক্স(mpox) সংক্রমণ এখন একটি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার মধ্যে পড়ে। আফ্রিকার ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো (DRC) থেকে শুরু হওয়া এই ভাইরাস এখন অন্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ছে। এখন পর্যন্ত আফ্রিকায় ১৮,৭০০-এরও বেশি রোগী এবং ৫০০-এরও বেশি মৃত্যু ঘটেছে। এই পরিসংখ্যান ২০২৩ সালের পুরো বছরের তুলনায় বেশি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আফ্রিকা সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (CDC) এর এই সতর্কতা আমাদের জানান দিচ্ছে যে, এমপক্স বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এর পরিণতি মারাত্মক হতে পারে। ডঃ এবেরে ওকেরেক, যিনি গ্লোবাল হেলথ প্রোগ্রামে চাথাম হাউসে সহকর্মী, তিনি বলেন যে, “যদি আমরা এখনই শক্তিশালী পদক্ষেপ না নিই, তাহলে নতুন এবং আরও বিপজ্জনক ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। এটি শুধু আফ্রিকার জন্য নয়, বরং বিশ্বের জন্যই বিপদজনক।”

এমপক্স সংকটের এই সময়টি একটি বড় পরীক্ষা হিসেবে কাজ করছে। কোভিড-১৯ মহামারির সময় আমরা দেখেছি, ধনী দেশগুলি স্বাস্থ্যসেবা এবং ভ্যাকসিন আগেই পেয়েছিল, কিন্ত অন্যান্য দেশগুলোর অনেক দেরিতে পেয়েছিল।

এছাড়া, কোভিড-১৯ মহামারির পর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্যানডেমিক এগ্রিমেন্ট নিয়ে আলোচনা চলছে। এই চুক্তির লক্ষ্য হচ্ছে, বড় রোগের প্রাদুর্ভাব হলে বিশ্ব কিভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে তা নির্ধারণ করা। তবে, এই চুক্তির আলোচনা কিছু জটিলতায় পড়েছে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলির স্বাস্থ্যসেবা ও তথ্য সংগ্রহের বিষয়টি নিয়ে।

নিক ডিয়ারডেন, গ্লোবাল জাস্টিস নাউয়ের পরিচালক, বলেছেন যে এমপক্স বহু বছর ধরে কিছু আফ্রিকান দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু এটি পশ্চিমের জন্য হুমকি হয়ে উঠলে তবেই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

তাঁর মতে, কোভিড-১৯ মহামারির সময়ও উন্নয়নশীল দেশগুলির জীবনকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এখন, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলি তাদের লাভের জন্য ভ্যাকসিনের অভ্যন্তরীণ অংশীদারিত্ব বজায় রাখছে এবং এটি পৃথিবীর ধনী দেশগুলির উপর চাপ দিচ্ছে।

আরো জানতে হবেঃ WHO এমপক্সকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে

এমপক্স মোকাবিলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ৫০,০০০ ডোজ জিননিওস ভ্যাকসিন ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে পাঠাবে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে, আফ্রিকা সিডিসি বলেছে যে, একটি স্থিতিশীল সরবরাহ গড়ে তুলতে হবে, যার মধ্যে আফ্রিকাতেই উৎপাদন অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

এই সংকটের সময়ে, বিশ্ববাসীকে  অনেক অভিগজ্ঞতা ও জানার সুযোগ রয়েছে। আমাদের উচিত এই সংকটের প্রতি সঠিক মনোভাব এবং সহমর্মিতা দেখানো, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের পরিস্থিতির জন্য আমরা আরও প্রস্তুত থাকতে পারি।

 

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Prove your humanity: 9   +   10   =  

You cannot copy content of this page

Scroll to Top