মানবকল্যাণে বিজ্ঞান রচনা

মানবকল্যাণে বিজ্ঞান রচনা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে পোস্টে, এই পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারবে মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনাটি। সুতরাং যে সকল শিক্ষার্থীরা মানবকল্যাণে বিজ্ঞান রচনা রচনাটি খুলছে তাদের জন্য এই পোস্টটি

মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা class 6

ভূমিকা : বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের অব্যাহত জয়যাত্রার এক যুগান্তকারী যুগ। একদা গুহাবাসী, অরণ্যচারী মানষু
বিজ্ঞানের বদৌলতে আজ ছুটে চলেছে গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে। বিজ্ঞান মানষুকে দিয়েছে অভাবনীয় বেগ, সভ্যতার
অগ্রযাত্রাকে করেছে দ্রুততর ও বহুমাত্রিক। ঘুচিয়ে দিয়েছে দরূ-দরা ূ ন্তরের ব্যবধান। মানষুকে দিয়েছে অনিঃশেষ
সম্ভাবনার অপ্রতিরোধ্য জয়যাত্রা।

বিজ্ঞানের উদ্ভব : বিজ্ঞান শব্দের অর্থ বিশেষ জ্ঞান। অতি প্রাচীনকালে মানষেু র বিশেষ কৌতূহলের চেতনায়
বিজ্ঞানের আবির্ভাব ঘটেছিল। প্রাকৃতিক নানা বিষয় সম্পর্কে অন্বেষুদষ্টিৃ মানষেু র মনে বিজ্ঞানের প্রেরণা
সঞ্চারিত করেছে। আর এই প্রেরণাই মানষুকে পরবর্তীকালে বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে এবং বিজ্ঞানকে নিজ প্রয়োজনে
ব্যবহার করতে উদ্বদ্ধু করেছে।

মানব সভ্যতায় বিজ্ঞান : প্রাচীন কালে, বিজ্ঞানের আলো থেকে বঞ্চিত মানষু ছিল প্রকৃতির হাতের এক অসহায়
ক্রীড়নক। গুহাবাসী সেই পশুসদশৃ মানষু যখন প্রথম পাথর ঘষে আগুন জ্বালায় তখন থেকেই শুরু হয় মানষেু র
বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার। তারপর সেখানেই বাধার সম্মুখীন হয়েছে, কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হয়েছে, মানষু
ব্যবহার করেছে বিজ্ঞানকে। বিজ্ঞানকে ব্যবহার করে মানষু এখন সমগ্র পৃথিবীর ওপর কর্তৃত্ব বিস্তার করেছে।
বিজ্ঞানই মানষুকে গুহাবাসী অবস্থা থেকে উন্নতির চরম শিখরে উন্নীত করেছে।

বিজ্ঞানীর আত্মত্যাগ : বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে মানব সভ্যতাও অগ্রগতির দিকে এগিয়েছে। অতীতের
সাথে বর্তমান পৃথিবীর তুলনা করলে এ সম্পর্কে কোনো সংশয় থাকে না। কিন্তু এই উন্নতির পেছনে অসংখ্য
বিজ্ঞানীর অবদান সম্পর্কে চিন্তা করলে আপনা থেকেই আমাদের মাথা নত হয়ে আসে। সত্য কথা বলেছিলেন বলে
ব্রুনোকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল, ল্যাভয়সিয়েকে হত্যা করা হয়েছিল গিলোটিনে। মহান বিজ্ঞানী
আর্কিমিডিস, কোপর্নিকাস, গ্যালিলিও প্রমখু অসংখ্য বিজ্ঞানী তাঁদের সমগ্র জীবন বিজ্ঞানের পিছনে ব্যয়
করেছেন। তাঁদের অক্লান্ত সাধনার পরিপ্রেক্ষিতেই বর্তমানে মানষু এক অত্যাধুনিক বিজ্ঞানের যুগে উন্নীত হয়ে
সক্ষম হয়েছে।

মানব জীবনে বিজ্ঞানের বহুমাত্রিক অবদান : বর্তমান যুগে, মানব জীবনের বিভিন্ন শাখায় বিজ্ঞানের বহুবিধ
অবদান পরিলক্ষিত হচ্ছে। যাতায়াত, কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রকৌশলসহ মানব জীবনের বহুক্ষেত্রে বিজ্ঞান এক
বিশাল ভূমিকা রাখছে। বিজ্ঞানকে এখন বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে আরও বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। এর ফলে
বিজ্ঞানকে মানব জীবনের বহুক্ষেত্রে বিভিন্ন ভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে।

কৃষি ক্ষেত্রে বিজ্ঞান : মানব সভ্যতার সূচনা লগ্নে মানষু তার বৈজ্ঞানিক চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে উর্বর জমিতে
কৃষিকাজের উপায় উদ্ভাবন করে। বিজ্ঞানের বদৌলতে সেই কৃষিতে মানষু এনেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। মানষু
আবিষ্কার করেছে ট্রাক্টরসহ নানা রকম কৃষি সরঞ্জাম। আগে যেখানে নদী থেকে পানি তুলে সেচ দিতে হত, এখন
তার পরিবর্তে মানষু পাম্প ব্যবহার করে ভূঅভ্যন্তর থেকে পানি উত্তোলন করে সেচ কাজ সম্পন্ন করছে।
কীটনাশকের সাহায্যে পোকামাকড় ও পঙ্গপালের হাত থেকে ফসল রক্ষা করছে। বর্তমানে ক্লোনিং পদ্ধতি ব্যবহার
করে বিজ্ঞানীরা উন্নত জাতের অধিক উৎপাদনশীল বীজ তৈরি করেছেন। এর ফলে মরুভূমির মতো উষর
জায়গায় কৃষিকাজ সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনাবষ্টিৃ র অঞ্চলে কৃত্রিম বষ্টিৃ পাত ঘটানো
সম্ভব হয়েছে। এভাবে খাদ্য উৎপাদনে বিজ্ঞান বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছে।

যাতায়াত ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান : বিজ্ঞান আর দরূ-দরা ূ ন্তরকে করেছে নিকট। বিজ্ঞানের বদৌলতে মানষু
আবিষ্কার করেছে দ্রুতগামী যানবাহন, বলেু ট ট্রেন, শব্দাতিগ উড়োজাহাজ। আজ মানষু পৃথিবীর একপ্রান্তে বসে
অপর প্রান্তের মানষেু র সাথে টেলিফোনে কথা বলতে পারে। টেলিভিশন, ফ্যাক্স, রেডিও, ই-মেইল ইত্যাদির মাধ্যমে
সারা বিশ্বের খবর যে-কোনো মহুূর্তে পেয়ে যেতে পারে। শুধুতাই নয়, রকেটে করে পৃথিবীর বাইরে মহাকাশে
পাড়ি জমাতে প্রস্তুত এখন মানষ।ু পৃথিবীর বাইরের কৃত্রিম উপগ্রহগুলো হল বর্তমানের সর্বাধুনিক যোগাযোগ
ব্যবস্থা। আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন নামক এই প্রক্রিয়ার দ্বারা স্যাটেলাইট ব্যবহার করে পৃথিবীর যে-কোনো
প্রান্তের খবরাখবর, তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করা যায়। যোগাযোগের ক্ষেত্রে আলোক তন্তু নিয়ে এসেছে নতুন প্রযুক্তি।
এর ফলে টেলিফোনে কথা বলার পাশাপাশি পরস্পরের ছবি দেখা যাচ্ছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে লেনদেন করা
যাচ্ছে কম্পিউটারের তথ্যাবলি। এভাবে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি সারা বিশ্বকে মানষেু র হাতের মঠু োয় এনে দিয়েছে।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান : চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের সাফল্যগুলোও কম বিস্ময়কর নয়। জন্মপূর্ব রোগ নির্ণয়ের্ণ
সাফল্যের ক্ষেত্রে বড় রকমের উত্তরণ ঘটেছে। জিন প্রতিস্থাপন চিকিৎসা প্রয়োগিক ক্ষেত্রে এক বিশাল সম্ভাবনা
হাজির করেছে। কর্নিয়া (অক্ষিগোলকের স্বচ্ছ আবরণ), বক্কৃ , অস্থিমজ্জা, হৃদপিণ্ড, ফুসফুস এবং যকৃতের মতো
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনে চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক সাফল্য অভাবনীয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে ফাইবার

অপটিকস্ (আলোক তন্তু বিদ্যা) ব্যবহারের ফলে মানবদেহের অভ্যন্তরস্থ ফুসফুস, পাকস্থলী, বহদৃ ন্ত্র, ক্ষুদ্রান্ত্র, উদর,
অস্থিগ্রস্থি, শিরা, ধমনী ইত্যাদির অবস্থা যন্ত্রের সাহায্যে অবলোকন করে নির্ভুলভাবে রোগ নির্ণয়র্ণ করা যায়। শুধু
তাই নয়, অপটিক ফাইবার (আলোক তন্তু) সংবলিত বিভিন্ন যন্ত্রের সাহায্যে ক্যান্সার নির্ণয়ের্ণ র জন্যে নমনা ু সংগ্রহ
করা যায়, অনাকাঙ্ক্ষিত বস্তুসামগ্রী ও ছোট ছোট টিউমার অপসারণ করা যায়। অতিকম্পনশীল শব্দ ও
লেজারকে কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞান চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিপ্লব সাধন করেছে। এর ফলে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গের
অবস্থা দেখা যেমন সম্ভব হচ্ছে তেমনি মত্রূথলি ও পিত্তকোষের পাথর চূর্ণ করার কাজেও এর সফল ব্যবহার হচ্ছে।
বহুমত্রূ রোগীর অন্ধত্ব প্রতিরোধে ব্যবহৃত হচ্ছে লেজার রশ্মি। এই রশ্মি কোষকলা ছেদনে ও রক্তবাহী নালিকার
ভেতরে জমে ওঠা প্রলেপ অপসারণেও সাহায্য করছে। কম্পিউটার প্রযুক্তি চিকিৎসা বিজ্ঞানকে নিয়ে এসেছে
সর্বাধুনিক পর্যায়ে। এর মাধ্যমে ছবি তুলে রোগ নির্ণয়র্ণ সম্ভব হচ্ছে।

শিক্ষা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান : শিক্ষা ক্ষেত্রেও বিজ্ঞানের অবদান অনস্বীকার্য। শিক্ষার প্রয়োজনীয় উপাদানগুলোর প্রায়
সবই বিজ্ঞানের উদ্ভাবন। বর্তমানে বিজ্ঞান শিক্ষা-ব্যবস্থাকে করেছে আরও আধুনিক ও উন্নত। এখন বিভিন্ন
শিক্ষামলকূ অনষ্ঠু ান প্রচারের মাধ্যমে রেডিও-টেলিভিশন শিক্ষার মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। কম্পিউটার বর্তমান
শিক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত করেছে এক নতুন শিক্ষা পদ্ধতি। বিভিন্ন শিক্ষামলকূ প্রোগ্রাম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা এখন
কম্পিউটারেই শিখতে পারছে অসংখ্যা জিনিস। তাছাড়া ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন বিখ্যাত লাইব্রেরির বই
পাঠ করা যায় এবং প্রয়োজনবোধে বিভিন্ন বিদেশী শিক্ষকের কাছ থেকে পড়ালেখা সম্পর্কে পরামর্শও গ্রহণ করা
যায়।

আবহাওয়ায় বিজ্ঞান : মানষেু র জীবনযাত্রার প্রায় সব কাজই নির্ভর করে আবহাওয়ার ওপর। আর এই
আবহাওয়ায় খবরাখবর বের করতে গিয়ে বিজ্ঞান তার প্রচণ্ড ক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। বৈজ্ঞানিকরা মহাকাশে
এমন কৃত্রিম উপগ্রহ প্রেরণ করেছেন যেগুলো পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করতে করতে প্রতিদিনই তৈরি করছে পৃথিবীর
মানচিত্র। ৭/৮ দিন আগে থেকেই আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানিয়ে আসন্ন ঘূণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে
জীবন ও সম্পদ রক্ষা করা এখন সম্ভব হচ্ছে বিজ্ঞানের কল্যাণে। তাছাড়াও কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে খনিজ সম্পদ,
তেল ও গ্যাসের উৎস, মাটির উপাদান ও জলজ সম্পদ সম্পর্কে জানা যাচ্ছে। জানা যাচ্ছে পঙ্গপালের আক্রমণের
আশঙ্কা সম্পর্কে। অনেক ক্ষেত্রে বিজ্ঞানকে ব্যবহার করে কৃত্রিম আবহাওয়া তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। যেমন, মানষু
এখন কৃত্রিম বষ্টিৃ নামাতে পারে, রঙ্গিন ধোঁয়া দিয়ে আকাশের গায়ে রংধনও ু সৃষ্টি করতে পারে। তাছাড়া বাঁধ দিয়ে
মানষু এখন বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস থামিয়ে দিতে সক্ষম হচ্ছে। এমন দিন দরেূ নয় যেদিন মানষু আবহাওয়ার ওপর
কর্তৃত্ব করতে পারবে। আর তা কেবলই সম্ভব হতে পারে বিজ্ঞানের বদৌলতে।

বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ? : বিজ্ঞান মানব সভ্যতার উন্নতির সর্ববহৎৃ হাতিয়ার। বিজ্ঞানের কল্যাণে মানব
জীবন হয়েছে সহজ ও স্বচ্ছল। কিন্তু তাই বলে বিজ্ঞান শুধুমাত্র মানষেু র উপকারই করে নি। স্বয়ংক্রিয় বৈজ্ঞানিক

যন্ত্র মানষেু র কাজ সম্পাদন করতে শুরু করার পরপরই অসংখ্য মানষু বেকারে পরিণত হয়েছে। এর ফলে বিশ্বের

এক বিশাল জনসমষ্টির রুজি-রোজগারের পথ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। বৈজ্ঞানিক যন্ত্রসম্বলিত বড় বড় শিল্প-
কারখানা ও মোটরচালিত গাড়িগুলো নষ্ট করছে পরিবেশ। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ব্যবহৃত বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় পদার্থ

অনেক সময় পরিবেশ ও মানষেু র ক্ষতি করছে। অ্যারোসল স্প্রে, ফ্রিজ ইত্যাদি হতে নির্গতর্গ পদার্থ পৃথিবীর ওজন
স্তরকে ফুটো করে দিচ্ছে। এর ফলে পৃথিবীর উত্তাপ বেড়ে যাচ্ছে ও মেরুদ্বয়ের বরফ গলা শুরু হয়েছে। তবে
বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের ভয়াবহতা পৃথিবীর মানষু সবচেয়ে বেশি প্রত্যক্ষ করেছিল প্রথম ও দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের
সময়। এ সময় মানষু বিজ্ঞানের অপব্যবহার দেখে চমকে উঠেছিল। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার
করে অসংখ্য শহর-বন্দর ধ্বংস কর দেয়া হয়েছিল। কিন্তু যত যাই হোক, বিজ্ঞানের অবদানকে মানষু কখনই
অস্বীকার করতে পারবে না। বরং বিজ্ঞানের অপব্যবহার রোধে সচেষ্ট হলে তা মানব জীবনে আরও ফলপ্রসূ
প্রভাব বিস্তারের সক্ষম হবে।

উপসংহার : “বিজ্ঞান যেন এ যুগের তিলোত্তমা স্বরূপিনী যার এক হাতে আছে অমতৃ ভাণ্ডার কিন্তু তার নয়ন
কটাক্ষে প্রলয় ঘটে যায়।” মানষেু র জীবনে তাই বিজ্ঞানের সার্থক ও ইতিবাচক প্রয়োগ ঘটাতে হবে। বিজ্ঞানের
আলোকে মানবজীবন আলোকিত করতে হবে। বিজ্ঞানের অপব্যবহার রোধে সকল মানষুকে এগিয়ে আসতে হবে।
বিজ্ঞানের জয়যাত্রাকে সঠিক পথে পরিচালনার মাধ্যমেই মানব সভ্যতার অগ্রগতি নিশ্চিত হবে।

মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা class 9

ভূমিকা : বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। বিজ্ঞান মানষুকে দিয়েছে অভাবনীয় গতি, সভ্যতার অগ্রযাত্রাকে করেছে
দততরও ু বহুমাত্রিক। বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারের জাদকরী ু স্পর্শে মানবজীবনের সর্বত্র এসেছে বৈপ্লবিক
পরিবর্তন। সর্বক্ষেত্রেআজ পরিলক্ষিত হচ্ছে বিজ্ঞানের অব্যাহত জয়যাত্রা। মানব কল্যাণে বিজ্ঞানের অবদান যে
কত ব্যাপক তা প্রতিদিনের বিচিত্রঅভিজ্ঞতা থেকে অনভবু করা যায়। বিজ্ঞানের কল্যাণে আমাদের দৈনন্দিন
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এসেছে সুখ, শান্তি ওসমদ্ধিৃ ।

‘বিজ্ঞান’ শব্দটির অর্থ : ‘বিজ্ঞান’ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘Science’, যা ল্যাটিন শব্দ ‘Scio’ থেকে
এসেছে।এর অর্থ জানা বা শিক্ষা লাভ করা। আভিধানিক অর্থে বিশেষ জ্ঞানই হলাে বিজ্ঞান। মনীষী স্পেন্সারের
মতে, বিজ্ঞান হলােসুশঙ্খৃ ল ও সুসংবদ্ধ জ্ঞান। অনসুন্ধিৎসুমানষেু র বস্তুজগৎ সম্পর্কে ধারণা এবং বিচিত্র কৌশলে
তার উপর আধিপত্যবিস্তারের প্রচেষ্টা থেকেই উদ্ভব ঘটেছে বিজ্ঞানের। এটি হয়েছে মানষেু রই প্রয়ােজনে, তার
প্রভাব মেটানোর তাড়না থেকে।এভাবে সভ্যতার বিকাশের সহায়ক শক্তি হয়ে উঠার মাধ্যমে বিজ্ঞান ক্রমেই
মানষেু র জীবনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেছে।

জীবন ও বিজ্ঞান : প্রয়ােজনই উদ্ভাবনের প্রেরণা জোগায়। মানষেু র অভাববােধ থেকে বিশেষ জ্ঞান হিসেবে
বিজ্ঞানেরউৎপত্তি। তাই জীবনের সঙ্গে বিজ্ঞানের সম্পর্ক যেমন পুরােনাে, তেমনি নিবিড়। মানষেু র অনসুন্ধিৎসা,
জিজ্ঞাসা ও আগ্রহথেকে বিজ্ঞানের বিচিত্র বিকাশ। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সংস্কার, বিশ্বাস ও
প্রবণতা বদলে যাচ্ছে। আজবিজ্ঞানের দষ্টিৃ দিয়ে আমরা সব কিছুযাচাই করে দেখতে চাই, প্রমাণ পেতে চাই অনেক
কিছুর। এ জিজ্ঞাসা ও তর্কেরপ্রবত্তিৃ আমাদের বৈজ্ঞানিক পরিবেশের ফসল। সুতরাং বিজ্ঞান সম্পর্কে আমরা যতই
অজ্ঞ হই না কেন, বিজ্ঞানের প্রভাবআমাদের জীবনের মর্মমর্ম লেূ প্রবেশ করেছে।

বিজ্ঞানের গুরুত্ব : মানবসমাজের যে দিকেই দষ্টিৃ পাত করা যায়, শুধুবিজ্ঞানের মহিমাই স্পষ্ট হয়ে উঠে।
বিজ্ঞানেরবলে মানষু জল, স্থল, অন্তরীক্ষ জয় করেছে; সংকট নিরসন ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বিধানের বন্ধুঅভাবনীয়
কৌশল আবিষ্কারকরেছে। জীবনের সর্বক্ষেত্রে বিজ্ঞানের গৌরবময় অবদান বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে আছে এবং
মানবজীবনের উপর এর সুগভীরপ্রভাব পড়ছে। মানবজীবনকে অফুরন্ত সুখে পরিপূর্ণ করে তােলার সাধনায় সদা
নিয়ােজিত বিজ্ঞান তার বিস্ময়কর আবিষ্কারচালিয়ে যাচ্ছে অবিরত। এ সাধনা যেমন ক্রমাগতভাবে চলছে,
তেমনি তার কল্যাণকর সুফলও নিবেদিত হচ্ছে মানষেু র| সেবায়। বিজ্ঞান আজ মতৃ ্যুকে জয় করার চেষ্টা চালিয়ে

যাচ্ছে। বিজ্ঞানের কর্মসাধনার র্ম পরিণতি হচ্ছে আধুনিক সভ্যতা।বিজ্ঞানের বলে বলীয়ান হয়ে মানষু আজ আকাশ
ও পাতালকে সাজিয়েছে নিজের পরিকল্পনা অনসা ু রে। তারা জীবনকে জয়করে মতৃ ্যুকে পদানত করার চেষ্টা
চালিয়ে যাচ্ছে। এভাবে নব নব কৌশল ও প্রকরণ প্রবর্তনের মাধ্যমে এ জগতে বিজ্ঞানএনেছে যুগান্তর; দরূকে
করেছে আপন আর জীবনকে করেছে সহজ।

চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান : চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাহায্যে আজ মানষু অকাল মতৃ ্যুর কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে।
কলেরা,বসন্ত, যক্ষ্মা ইত্যাদি মরণব্যাধির সু-চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে আবিষ্কৃত হয়েছে। উন্নতমানের ওষুধ,
অস্ত্রোপচার ব্যবস্থা,এক্সরে, আল্ট্রাভায়ােলেটরে, অণবী ু ক্ষণ যন্ত্র ইত্যাদি আবিষ্কারের ফলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এসেছে
এক আমলূ পরিবর্তন। উন্নতচিকিৎসা সেবার ফলে শিশু ও মাতৃমতৃ ্যুর হার হ্রাস পেয়েছে, বদ্ধিৃ পেয়েছে মানষেু র
গড় আয়ু। কম্পিউটারকেন্দ্রিক টেলিমেডিসিন পদ্ধতিতে পৃথিবীর যে কোনাে প্রান্ত থেকে যে কোনাে ব্যক্তি উন্নত
দেশের ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে সুস্থ।থাকতে পারছে। আবিষ্কৃত হয়েছে কৃত্রিম হৃদযন্ত্র ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ।
অবলীলায় করা হচ্ছে ওপেন হার্ট সার্জারি, শরীর না কেটেবাইপাস সার্জারি, প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে একজনের অঙ্গ
অন্যজনের শরীরে। বিজ্ঞানের কল্যাণে মানষেু র জেনেটিক স্বরূপ।উদ্ঘাটনের দ্বারপ্রান্তে পৌছে গেছে বিজ্ঞানীরা,
যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে বয়ে আনবে যুগান্তকারী বিপ্লব।

কৃষিক্ষেত্রে বিজ্ঞান : আধুনিক বিজ্ঞান কৃষিক্ষেত্রেও অশেষ উন্নতি সাধন করেছে। প্রাচীন ভোতা লাঙলের
পরিবর্তেআজ ব্যবহৃত হচ্ছে উন্নতমানের কলের লাঙল ও ট্রাক্টর। ফসলের উৎপাদন ও মান বদ্ধিৃ র জন্য ব্যবহৃত
হচ্ছে আধুনিকরাসায়নিক সার। কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে উন্নতমানের
কীটনাশক। প্রকৃতির দয়ার উপর।নির্ভরশীল না হয়ে গভীর ও অগভীর নলকূপের সাহায্যে পানি সেচের ব্যবস্থা
করা হচ্ছে। গবেষণার মাধ্যমে সরবরাহ করাহচ্ছে উন্নতমানের বীজ। তা ছাড়া থরা, শীত ও লবণাক্ততা সহনশীল
ফসলের জাত উদ্ভাবন কৃষি উৎপাদনে এক নীরব।বিপ্লবের সূত্রপাত ঘটিয়েছে। ফলে ধান, গমসহ সকল প্রকার
খাদ্যশস্যের উৎপাদন বহুগুণ বদ্ধিৃ পেয়েছে। উন্নত জাতেরমাছ, গরু-ছাগল ও হাঁস-মরুগি উদ্ভাবনের ফলে
এসবের উৎপাদন বদ্ধিৃ পেয়েছে অভাবনীয় হারে। এভাবে বিজ্ঞান আজউর্বরতা দিয়ে ক্ষয়িষ্ণুবসুধাকে শস্যবতী
করে ক্ষুধার্ত মানষেু র মখেু হাসি ফুটিয়েছে।

যােগাযােগ ক্ষেত্রে বিজ্ঞান : আধুনিক যােগাযােগ ব্যবস্থার পুরােটাই বিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল। বলেু ট ট্রেন,
আধুনিককনকর্ড বিমান, মাটির তলায় ধাবমান টিউব রেল সবই বিজ্ঞানের অবদান। বিজ্ঞানের অবদানেই আজ
আমরা এরােপ্লেনে।চড়ে শনূ্যাকাশে শত শত মাইল পাড়ি দিচ্ছি, যা একসময় ছিল অচিন্তনীয়। তাছাড়া এখন
আমরা হাতের মােবাইল টিপেমহুূর্তের মধ্যে পৃথিবীর যে কোনাে প্রান্তে অবস্থিত ব্যক্তির সাথে কথা বলতে পারি,
ছবি বা ভিডিও আদান-প্রদান করতেপারি। সারা বিশ্বের প্রতি মহুূর্তের সংবাদও এখন আমরা মােবাইলে পাই। যা
বিজ্ঞানেরই আশীর্বাদ।

শিল্পক্ষেত্রে বিজ্ঞান : একদা মানষু জীবনের প্রয়ােজনীয় উপকরণ সংগ্রহ ও উৎপাদনে কায়িক শ্রমের উপর
সম্পূর্ণনির্ণ র্ভরশীল ছিল। এতে মানষেু র কাজ করতে অধিক সময় ও শ্রমের প্রয়ােজন হতাে। কিন্তু এর তুলনায় কাজ

হতাে কম।বিজ্ঞানের কল্যাণে শিল্পবিপ্লবের ফলে কলকারখানা স্থাপিত হয়েছে, বেড়েছে উৎপাদন, লাঘব হয়েছে
মানষেু র কায়িক শ্রম।উৎপাদনের সর্বক্ষেত্রে আজ বিরাজ করছে যন্ত্রের আধিপত্য। ফলে মানষু পেয়েছে স্বস্তি ও
আয়াসপূর্ণ জীবন। শত মানষেু রআন্তরিক প্রচেষ্টায় যা আগে করার চেষ্টা করা হতাে এখন তা যন্ত্রের বােতাম টিপে
মহুূর্তের মধ্যে সম্পন্ন করা যাচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে মানষেু র কর্মেরর্মে স্থানটিও দখল করে নিচ্ছে কর্মী রােবট।

প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান : বিজ্ঞানের কল্যাণস্পর্শে প্রকৃতির অনেক ধ্বংসাত্মক দিককে মানষু
কল্যাণকর দিকেপরিবর্তিত করতে সক্ষম হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস, নদীশাসন প্রভৃতি ক্ষেত্রে মানষু আজ
বিজ্ঞানের বদৌলতে অভূতপূর্বসাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। বায়ুশক্তিকে কাজে লাগিয়ে উইন্ডমিলের
মাধ্যমে মানষু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশিআরও অনেক কিছুকরছে। মােটকথা, বিজ্ঞানের কল্যাণে একসময়ের
ভয়ংকরী প্রকৃতি আজ শুভংকরী প্রেয়সীতে রূপান্তরিতহয়েছে।

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান : দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান মানষুকে দিয়েছে স্বাচ্ছন্দ্য ও আরাম-আয়েশ।
রেডিও,টেলিভিশন, সংবাদপত্র, বৈদ্যুতিক বাতি ও পাখা, টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ, বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি, বৈদ্যুতিক হিটার
ইত্যাদি।আবিষ্কারের ফলে আমাদের জীবনযাত্রা অত্যন্ত সহজ ও আরামদায়ক হয়ে উঠেছে। অফিস-আদালতে
নিত্য ব্যবহৃত হচ্ছে।কম্পিউটার, ফটোস্ট্যাট মেশিন, টেলেক্স, ফ্যাক্স ইত্যাদি যন্ত্রপাতি। এমনিভাবে বিজ্ঞান
মানষেু র দৈনন্দিন জীবনে কত রকমপ্রয়ােজন যে মেটাচ্ছে তার ইয়ত্তা নেই।

বিজ্ঞানের ক্ষতিকর দিক : বিজ্ঞান একদিকে যেমন মানষেু র অশেষ কল্যাণ সাধন করে আসছে, অন্যদিকে
তেমনিএনেছে বিভীষিকা। যন্ত্রের উপর নির্ভর করতে করতে মানষেু র জীবনে এসেছে যন্ত্রনির্ভরতা, কর্মবির্ম মখতা। ু
এটি অনেক।ক্ষেত্রে বেকার সমস্যা বাড়িয়ে তুলছে। ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট টেলিভিশনের মতাে আধুনিক
প্রযুক্তির হাত ধরে অনেকক্ষেত্রে অনপ্রুবেশ ঘটছে বিজাতীয় অপসংস্কৃতির। এতে করে যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয়
ঘটছে। রাসায়নিক ও পারমাণবিকঅস্ত্রের ব্যবহার আজ মানব সভ্যতাকে ধ্বংসের মখাে ু মখিু এনে দাঁড় করিয়েছে।
মিসাইল, বােমারু বিমান, ট্যাংক, সাবমেরিন ইত্যাদি আবিষ্কারের ফলে মানবজীবনে বিজ্ঞান অভিশাপে পরিণত
হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকার বােমাবর্ষণের পর জাপানের হিরােশিমা ও নাগাসাকি শহরের
ধ্বংসযজ্ঞ তারই বাস্তব প্রমাণ।
উপসংহার :
বর্তমান সভ্যতার মলেূ রয়েছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞান আমাদের জীবনে এনেছে সুখ-সমদ্ধিৃ এবং আমাদেরদৈনন্দিন
জীবনকে করেছে গতিময়। মানব জাতি বর্তমানে প্রতি মহুূর্তে প্রতি পদক্ষেপে বিজ্ঞানের কাছে দায়বদ্ধ।
বিজ্ঞানেরযথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হলে অদরূ ভবিষ্যতে মানব সভ্যতা সমদ্ধিৃ ও উন্নতির চরম শিখরে
আরােহণ করবে।

মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা for hsc

ভূমিকা :
বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। বিজ্ঞান মানষুকে দিয়েছে অভাবনীয় গতি, সভ্যতার অগ্রযাত্রাকে করেছে দততরও ু
বহুমাত্রিক। বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারের জাদকরী ু স্পর্শে মানবজীবনের সর্বত্র এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।
সর্বক্ষেত্রেআজ পরিলক্ষিত হচ্ছে বিজ্ঞানের অব্যাহত জয়যাত্রা। মানব কল্যাণে বিজ্ঞানের অবদান যে কত ব্যাপক
তা প্রতিদিনের বিচিত্রঅভিজ্ঞতা থেকে অনভবু করা যায়। বিজ্ঞানের কল্যাণে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি
ক্ষেত্রে এসেছে সুখ, শান্তি ওসমদ্ধিৃ ।
‘বিজ্ঞান’ শব্দটির অর্থ :
‘বিজ্ঞান’ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘Science’, যা ল্যাটিন শব্দ ‘Scio’ থেকে এসেছে।এর অর্থ জানা বা শিক্ষা
লাভ করা। আভিধানিক অর্থে বিশেষ জ্ঞানই হলাে বিজ্ঞান। মনীষী স্পেন্সারের মতে, বিজ্ঞান হলােসুশঙ্খৃ ল ও
সুসংবদ্ধ জ্ঞান। অনসুন্ধিৎসুমানষেু র বস্তুজগৎ সম্পর্কে ধারণা এবং বিচিত্র কৌশলে তার উপর
আধিপত্যবিস্তারের প্রচেষ্টা থেকেই উদ্ভব ঘটেছে বিজ্ঞানের। এটি হয়েছে মানষেু রই প্রয়ােজনে, তার প্রভাব
মেটানোর তাড়না থেকে।এভাবে সভ্যতার বিকাশের সহায়ক শক্তি হয়ে উঠার মাধ্যমে বিজ্ঞান ক্রমেই মানষেু র
জীবনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেছে।
জীবন ও বিজ্ঞান :
প্রয়ােজনই উদ্ভাবনের প্রেরণা জোগায়। মানষেু র অভাববােধ থেকে বিশেষ জ্ঞান হিসেবে বিজ্ঞানেরউৎপত্তি। তাই
জীবনের সঙ্গে বিজ্ঞানের সম্পর্ক যেমন পুরােনাে, তেমনি নিবিড়। মানষেু র অনসুন্ধিৎসা, জিজ্ঞাসা ও আগ্রহথেকে
বিজ্ঞানের বিচিত্র বিকাশ। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সংস্কার, বিশ্বাস ও প্রবণতা বদলে যাচ্ছে।
আজবিজ্ঞানের দষ্টিৃ দিয়ে আমরা সব কিছুযাচাই করে দেখতে চাই, প্রমাণ পেতে চাই অনেক কিছুর। এ জিজ্ঞাসা ও
তর্কেরপ্রবত্তিৃ আমাদের বৈজ্ঞানিক পরিবেশের ফসল। সুতরাং বিজ্ঞান সম্পর্কে আমরা যতই অজ্ঞ হই না কেন,
বিজ্ঞানের প্রভাবআমাদের জীবনের মর্মমর্ম লেূ প্রবেশ করেছে।
বিজ্ঞানের গুরুত্ব :
মানবসমাজের যে দিকেই দষ্টিৃ পাত করা যায়, শুধুবিজ্ঞানের মহিমাই স্পষ্ট হয়ে উঠে। বিজ্ঞানেরবলে মানষু জল,
স্থল, অন্তরীক্ষ জয় করেছে; সংকট নিরসন ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বিধানের বন্ধুঅভাবনীয় কৌশল আবিষ্কারকরেছে।
জীবনের সর্বক্ষেত্রে বিজ্ঞানের গৌরবময় অবদান বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে আছে এবং মানবজীবনের উপর এর
সুগভীরপ্রভাব পড়ছে। মানবজীবনকে অফুরন্ত সুখে পরিপূর্ণ করে তােলার সাধনায় সদা নিয়ােজিত বিজ্ঞান তার
বিস্ময়কর আবিষ্কারচালিয়ে যাচ্ছে অবিরত। এ সাধনা যেমন ক্রমাগতভাবে চলছে, তেমনি তার কল্যাণকর

সুফলও নিবেদিত হচ্ছে মানষেু র| সেবায়। বিজ্ঞান আজ মতৃ ্যুকে জয় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞানের
কর্মসাধনার র্ম পরিণতি হচ্ছে আধুনিক সভ্যতা।বিজ্ঞানের বলে বলীয়ান হয়ে মানষু আজ আকাশ ও পাতালকে
সাজিয়েছে নিজের পরিকল্পনা অনসা ু রে। তারা জীবনকে জয়করে মতৃ ্যুকে পদানত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এভাবে নব নব কৌশল ও প্রকরণ প্রবর্তনের মাধ্যমে এ জগতে বিজ্ঞানএনেছে যুগান্তর; দরূকে করেছে আপন আর
জীবনকে করেছে সহজ।
চিকিৎসাক্ষেত্রে বিজ্ঞান :
চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাহায্যে আজ মানষু অকাল মতৃ ্যুর কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে। কলেরা,বসন্ত, যক্ষ্মা ইত্যাদি
মরণব্যাধির সু-চিকিৎসা বিজ্ঞানের কল্যাণে আবিষ্কৃত হয়েছে। উন্নতমানের ওষুধ, অস্ত্রোপচার ব্যবস্থা,এক্সরে,
আল্ট্রাভায়ােলেটরে, অণবী ু ক্ষণ যন্ত্র ইত্যাদি আবিষ্কারের ফলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এসেছে এক আমলূ পরিবর্তন।
উন্নতচিকিৎসা সেবার ফলে শিশু ও মাতৃমতৃ ্যুর হার হ্রাস পেয়েছে, বদ্ধিৃ পেয়েছে মানষেু র গড় আয়ু।
কম্পিউটারকেন্দ্রিক টেলিমেডিসিন পদ্ধতিতে পৃথিবীর যে কোনাে প্রান্ত থেকে যে কোনাে ব্যক্তি উন্নত দেশের
ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে সুস্থ।থাকতে পারছে। আবিষ্কৃত হয়েছে কৃত্রিম হৃদযন্ত্র ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। অবলীলায়
করা হচ্ছে ওপেন হার্ট সার্জারি, শরীর না কেটেবাইপাস সার্জারি, প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে একজনের অঙ্গ অন্যজনের
শরীরে। বিজ্ঞানের কল্যাণে মানষেু র জেনেটিক স্বরূপ।উদ্ঘাটনের দ্বারপ্রান্তে পৌছে গেছে বিজ্ঞানীরা, যা চিকিৎসা
বিজ্ঞানে বয়ে আনবে যুগান্তকারী বিপ্লব।
কৃষিক্ষেত্রে বিজ্ঞান :
আধুনিক বিজ্ঞান কৃষিক্ষেত্রেও অশেষ উন্নতি সাধন করেছে। প্রাচীন ভোতা লাঙলের পরিবর্তেআজ ব্যবহৃত হচ্ছে
উন্নতমানের কলের লাঙল ও ট্রাক্টর। ফসলের উৎপাদন ও মান বদ্ধিৃ র জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে আধুনিকরাসায়নিক
সার। কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে উন্নতমানের কীটনাশক। প্রকৃতির দয়ার
উপর।নির্ভরশীল না হয়ে গভীর ও অগভীর নলকূপের সাহায্যে পানি সেচের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গবেষণার মাধ্যমে
সরবরাহ করাহচ্ছে উন্নতমানের বীজ। তা ছাড়া থরা, শীত ও লবণাক্ততা সহনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন কৃষি
উৎপাদনে এক নীরব।বিপ্লবের সূত্রপাত ঘটিয়েছে। ফলে ধান, গমসহ সকল প্রকার খাদ্যশস্যের উৎপাদন বহুগুণ
বদ্ধিৃ পেয়েছে। উন্নত জাতেরমাছ, গরু-ছাগল ও হাঁস-মরুগি উদ্ভাবনের ফলে এসবের উৎপাদন বদ্ধিৃ পেয়েছে
অভাবনীয় হারে। এভাবে বিজ্ঞান আজউর্বরতা দিয়ে ক্ষয়িষ্ণুবসুধাকে শস্যবতী করে ক্ষুধার্ত মানষেু র মখেু হাসি
ফুটিয়েছে।
যােগাযােগ ক্ষেত্রে বিজ্ঞান :
আধুনিক যােগাযােগ ব্যবস্থার পুরােটাই বিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল। বলেু ট ট্রেন, আধুনিককনকর্ড বিমান, মাটির
তলায় ধাবমান টিউব রেল সবই বিজ্ঞানের অবদান। বিজ্ঞানের অবদানেই আজ আমরা এরােপ্লেনে।চড়ে
শনূ্যাকাশে শত শত মাইল পাড়ি দিচ্ছি, যা একসময় ছিল অচিন্তনীয়। তাছাড়া এখন আমরা হাতের মােবাইল
টিপেমহুূর্তের মধ্যে পৃথিবীর যে কোনাে প্রান্তে অবস্থিত ব্যক্তির সাথে কথা বলতে পারি, ছবি বা ভিডিও
আদান-প্রদান করতেপারি। সারা বিশ্বের প্রতি মহুূর্তের সংবাদও এখন আমরা মােবাইলে পাই। যা বিজ্ঞানেরই
আশীর্বাদ।
শিল্পক্ষেত্রে বিজ্ঞান :

একদা মানষু জীবনের প্রয়ােজনীয় উপকরণ সংগ্রহ ও উৎপাদনে কায়িক শ্রমের উপর সম্পূর্ণনির্ণ র্ভরশীল ছিল। এতে
মানষেু র কাজ করতে অধিক সময় ও শ্রমের প্রয়ােজন হতাে। কিন্তু এর তুলনায় কাজ হতাে কম।বিজ্ঞানের কল্যাণে
শিল্পবিপ্লবের ফলে কলকারখানা স্থাপিত হয়েছে, বেড়েছে উৎপাদন, লাঘব হয়েছে মানষেু র কায়িক
শ্রম।উৎপাদনের সর্বক্ষেত্রে আজ বিরাজ করছে যন্ত্রের আধিপত্য। ফলে মানষু পেয়েছে স্বস্তি ও আয়াসপূর্ণ জীবন।
শত মানষেু রআন্তরিক প্রচেষ্টায় যা আগে করার চেষ্টা করা হতাে এখন তা যন্ত্রের বােতাম টিপে মহুূর্তের মধ্যে
সম্পন্ন করা যাচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে মানষেু র কর্মেরর্মে স্থানটিও দখল করে নিচ্ছে কর্মী রােবট।
প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান :
বিজ্ঞানের কল্যাণস্পর্শে প্রকৃতির অনেক ধ্বংসাত্মক দিককে মানষু কল্যাণকর দিকেপরিবর্তিত করতে সক্ষম
হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস, নদীশাসন প্রভৃতি ক্ষেত্রে মানষু আজ বিজ্ঞানের বদৌলতে অভূতপূর্বসাফল্য অর্জন
করতে সক্ষম হয়েছে। বায়ুশক্তিকে কাজে লাগিয়ে উইন্ডমিলের মাধ্যমে মানষু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশিআরও
অনেক কিছুকরছে। মােটকথা, বিজ্ঞানের কল্যাণে একসময়ের ভয়ংকরী প্রকৃতি আজ শুভংকরী প্রেয়সীতে
রূপান্তরিতহয়েছে।
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান :
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান মানষুকে দিয়েছে স্বাচ্ছন্দ্য ও আরাম-আয়েশ। রেডিও,টেলিভিশন, সংবাদপত্র, বৈদ্যুতিক
বাতি ও পাখা, টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ, বৈদ্যুতিক ইস্ত্রি, বৈদ্যুতিক হিটার ইত্যাদি।আবিষ্কারের ফলে আমাদের
জীবনযাত্রা অত্যন্ত সহজ ও আরামদায়ক হয়ে উঠেছে। অফিস-আদালতে নিত্য ব্যবহৃত হচ্ছে।কম্পিউটার,
ফটোস্ট্যাট মেশিন, টেলেক্স, ফ্যাক্স ইত্যাদি যন্ত্রপাতি। এমনিভাবে বিজ্ঞান মানষেু র দৈনন্দিন জীবনে কত
রকমপ্রয়ােজন যে মেটাচ্ছে তার ইয়ত্তা নেই।
বিজ্ঞানের ক্ষতিকর দিক :
বিজ্ঞান একদিকে যেমন মানষেু র অশেষ কল্যাণ সাধন করে আসছে, অন্যদিকে তেমনিএনেছে বিভীষিকা। যন্ত্রের
উপর নির্ভর করতে করতে মানষেু র জীবনে এসেছে যন্ত্রনির্ভরতা, কর্মবির্ম মখতা। ু এটি অনেক।ক্ষেত্রে বেকার সমস্যা
বাড়িয়ে তুলছে। ইন্টারনেট ও স্যাটেলাইট টেলিভিশনের মতাে আধুনিক প্রযুক্তির হাত ধরে অনেকক্ষেত্রে অনপ্রুবেশ
ঘটছে বিজাতীয় অপসংস্কৃতির। এতে করে যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে। রাসায়নিক ও পারমাণবিকঅস্ত্রের
ব্যবহার আজ মানব সভ্যতাকে ধ্বংসের মখাে ু মখিু এনে দাঁড় করিয়েছে। মিসাইল, বােমারু বিমান, ট্যাংক,
সাবমেরিন ইত্যাদি আবিষ্কারের ফলে মানবজীবনে বিজ্ঞান অভিশাপে পরিণত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়
আমেরিকার বােমাবর্ষণের পর জাপানের হিরােশিমা ও নাগাসাকি শহরের ধ্বংসযজ্ঞ তারই বাস্তব প্রমাণ।
উপসংহার :
বর্তমান সভ্যতার মলেূ রয়েছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞান আমাদের জীবনে এনেছে সুখ-সমদ্ধিৃ এবং আমাদেরদৈনন্দিন
জীবনকে করেছে গতিময়। মানব জাতি বর্তমানে প্রতি মহুূর্তে প্রতি পদক্ষেপে বিজ্ঞানের কাছে দায়বদ্ধ।
বিজ্ঞানেরযথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হলে অদরূ ভবিষ্যতে মানব সভ্যতা সমদ্ধিৃ ও উন্নতির চরম শিখরে
আরােহণ করবে।

মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা pdf

https://drive.google.com/file/d/1MexCLuEuQiQaHzqkkAiankBex5nbNSSi/view?usp=share_link

https://drive.google.com/file/d/1MexCLuEuQiQaHzqkkAiankBex5nbNSSi/view?usp=share_link

https://drive.google.com/file/d/1qjFJ9_VY_07yw_R2gwql-0a1SErbV993/view?usp=share_link

https://drive.google.com/file/d/1x3lbuSskdj2gDkV34rbPv3KSFV1TGTeD/view?usp=share_link

https://drive.google.com/file/d/1pvqteSdQekNKCuTUhEzrQ4feewNgxJQa/view?usp=share_link

https://drive.google.com/file/d/1bUqy23OKWo46F2DXBQq4dbOZ7jVH8gKO/view?usp=share_link

https://drive.google.com/file/d/1PbGUVsa5JKIFgS4Wvgm4kzwCCjB8h_75/view?usp=share_link

https://drive.google.com/file/d/1zLgtzJajOuS9NFgXCNTOJ8C2tipWbb8R/view?usp=share_link

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা ২০ পয়েন্ট
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি রচনা
বিজ্ঞান বিষয়ক রচনা
বিজ্ঞানের অবদান রচনা
মানব জীবনে বিজ্ঞান রচনা
বিজ্ঞান রচনা
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা উক্তি
মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা ২০ পয়েন্ট
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা পিডিএফ
বিজ্ঞানের আবিষ্কার অনুচ্ছেদ

মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা pdf
মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা class 6
মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা class 9
মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা for hsc
মানব কল্যাণ বিজ্ঞান রচনা
মানব কল্যানে বিজ্ঞান রচনা
মানবকল্যাণে বিজ্ঞান রচনা
মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা 0 পয়েন্ট
মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা ২০০ শব্দ
মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা সহজ
মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা উক্তি
মানব কল্যাণে বিজ্ঞান রচনা pdf download
মানবকল্যাণে বিজ্ঞান রচনা hsc
মানবকল্যাণে বিজ্ঞান রচনা ssc
মানবকল্যাণে বিজ্ঞান রচনা ২০ পয়েন্ট

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Prove your humanity: 10   +   6   =  

You cannot copy content of this page

Scroll to Top