অনুসর্গ কাকে বলে , উদাহরন

অনুসর্গ কাকে বলে – অনুসর্গ” বাংলা ভাষায় একধরনের অব্যয় পদ বা শব্দ, যা বিশেষত বর্ণনা করার জন্য ব্যবহৃত হয়। অনুসর্গ বাক্যের অর্থ পরিবর্তন করে সাহায্য করে এবং বিভক্তির কাজ করে। এটি বর্ণ্য করার ক্ষমতা রাখে এবং বর্ণনা করে সাহায্য করে। এটি অনেক ধরনের হতে পারে, যেমন: “অনুসর্গের শ্রেণিবিভাগ”।

অনুসর্গ দুই প্রকারে বিভক্ত হয়:

  1. বাংলা অনুসর্গ দুই প্রকার। যথা-
    • সাধারণ অনুসর্গ: এধরনের অনুসর্গ পদ ক্রিয়াপদ ব্যতীত অন্য পদগুলো থেকে উৎপন্ন হয়। যেমন: উপরে, কাছে, জন্য, দ্বারা, বনাম।
    • ক্রিয়াজাত অনুসর্গ: এধরনের অনুসর্গ পদ শুধুমাত্র ক্রিয়াপদ থেকেই উৎপন্ন হয়। যেমন: করে, থেকে, দিয়ে, ধরে, বলে।

অনুসর্গ প্রধানভাবে বাক্যের অর্থ পরিবর্তন করে এবং বিভক্তির কাজ করে, তাই এটি বাংলা ভাষার ব্যাকরণে গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।

অনুসর্গ কাকে বলে

বাংলা ভাষার ব্যাকরণে “অনুসর্গ” শব্দটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অব্যয় পদ বা শব্দ যা বাক্যের অর্থ পরিবর্তন করে এবং বিভক্তির কাজ করে। এটি বাংলা ভাষার ব্যাকরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং বাক্যের গঠনে মৌলিক ভূমিকা পালন করে। অনুসর্গের উপস্থাপনা বাক্যের মাধ্যমে সংজ্ঞা, অবস্থা, গুণ, সময়, স্থান, কার্য, উদ্দেশ্য, দিক, পর্যায়, মাধ্যম, সম্পর্ক, সুযোগ, পর্যন্ত, সম্মিলিতকরণ, সম্বন্ধ, কর্ম ইত্যাদি বিশেষত বর্ণনা করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

অনুসর্গের বৈশিষ্ট্য

১. অনুসর্গ অব্যয় পদ এবং এগুলোর নিজস্ব অর্থ আছে।

২. অনুসর্গ শব্দের পরে বসে সংশ্লিষ্ট শব্দের সঙ্গে পরবর্তী শব্দের অর্থবোধক সম্পর্ক সৃষ্টি করে।

৩. বিভক্তি দিয়ে যেমন কারক চেনা যায়, তেমনই অনুসর্গ দিয়েও কারক চেনা যায়।

৪. অব্যয়গুলোর নিজস্ব অর্থ থাকায় সেগুলো পৃথকভাবে ব্যবহৃত হলে অনুসর্গ হয় না।

৫. অনুসর্গের পূর্ব পদটি বিশেষ্য হলে সেটি বিভক্তিযুক্ত হতে পারে, আবার না-ও হতে পারে। কিন্তু সর্বনাম হলে অবশ্যই বিভক্তিযুক্ত হবে।

৬. অনুসর্গ বিভক্তির মতো কাজ করে।

৭. কতকগুলো অনুসর্গ শব্দ-বিভক্তির মতো কারক নির্ণয়ে সাহায্য করে। এগুলো : হইতে, হতে, চেয়ে, দ্বারা, দিয়া, দিয়ে, কর্তৃক ইত্যাদি।

৮. ক্ষেত্রবিশেষে অনুসর্গের ব্যবহার সাধু ও চলিত ভাষায় ভিন্ন হতে পারে।

অনুসর্গের প্রয়োজনীয়তা

১. অনুসর্গগুলো বাংলা ভাষায় বিভক্তির কাজ করে। এজন্য বাক্য গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

২. অনুসর্গগুলো বাক্য গঠনে সহায়তা করে। অনুসর্গ ব্যতীত বাক্য গঠন সম্ভব হয় না।

৩. অভাব, তুলনা ইত্যাদি ভাব প্রকাশ করতে অনুসর্গের প্রয়োজন।

৪. অনুসর্গ ছাড়া কারকের অর্থ প্রকাশ পায় না।

৫. বিভক্তির কাজ অনুসর্গ দিয়ে করা যায়।

৬. অনুসর্গ বাক্যে শব্দবিভক্তির ন্যায় ব্যবহৃত হয়ে কারক-বাচকতা প্রকাশ করে।

৭. অনুসর্গ বাক্যের পদগুলোর মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে।

৮. বাংলা অনুসর্গ বিভক্তির কাজ করে, ফলে এর দ্বারা কারক নির্ণয় করা সহজ হয়।

৯. অনুসর্গের দ্বারা বাক্যের ভাব সুষ্ঠু ও পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ করা যায়।

১০. বাংলা অনুসর্গ বিভক্তির ন্যায় বসে, যার ফলে এর দ্বারা কারক নির্ণয় করা সহজ হয়।

অনুসর্গের প্রধান শ্রেণিবিভাগ

অনুসর্গ দুই প্রকারে বিভক্ত হয়:

বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত অনুসর্গগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

যথা : ১. শব্দজাত অনুসর্গ ও ২. ক্রিয়াজাত অনুসর্গ।

১. শব্দজাত অনুসর্গ  যেমন —  দিকে, প্রতি, নিকট, তরে, বিনা, ছাড়া, সহিত, সঙ্গে, সম্মুখে, সামনে, আগে, নিমিত্ত, জন্য, অবধি, পক্ষে, কারণে, সদৃশ ইত্যাদি হলো শব্দজাত অনুসর্গ।

২. ক্রিয়াজাত অনুসর্গ– যেমন — করে, করিয়া, লাগিয়া, ধরে, বলিয়া, বলে, হতে ইত্যাদি ।

১. ক্রিয়াজাত অনুসর্গ

এই ধরনের অনুসর্গগুলি শুধুমাত্র ক্রিয়াপদ থেকেই উৎপন্ন হয় এবং উপরে সর্বনাম বা বিশেষ্য পদ যোগ করে শব্দ বিভক্তির কাজ করে। উদাহরণস্বরূপ: “করে,” “থেকে,” “দিয়ে” ইত্যাদি।

২. অব্যয়জাত অনুসর্গ

এই ধরনের অনুসর্গগুলি ক্রিয়াপদ ছাড়া অন্যান্য শব্দ থেকেই উৎপন্ন হয় এবং সংজ্ঞা বর্ণনা করে। এই অনুসর্গগুলি বাক্যের অর্থ পরিবর্তন না করে কিন্তু বাক্যের স্বাভাবিক গঠন বা সংজ্ঞা প্রকাশ করে। উদাহরণস্বরূপ: “বড়,” “সুন্দর” ইত্যাদি।

সুতরাং, “অনুসর্গ” শব্দটি বাংলা ভাষার ব্যাকরণে একটি মৌলিক এবং গুরুত্বপূর্ণ অব্যয় পদ, যা বাক্যের অর্থ পরিবর্তন করে এবং বিভক্তির কাজ করে, এবং বাংলা ভাষা ও ব্যাকরণে এর গুরুত্ব অত্যন্ত বৃদ্ধি করে।

মন্তব্য করুন

You cannot copy content of this page