অব্যয় পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি, চেনার উপায়, উদাহরণ, PDF

অব্যয় পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি, চেনার উপায়, উদাহরণ, PDF জানতে পারবে।  সকল পদের উদাহরন সহ বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবে।

সকল শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য আজকের পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এই পোস্টে অব্যয় পদের সকল বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে ।

অব্যয় পদ কাকে বলে

বাংলা ভাষায় কিছু শব্দ আছে, সে সকল শব্দ কোন অবস্থাতে কোন ভাবেই পরিবর্তন হয় না। অর্থাৎ বাংলা ভাষায় যে সকল শব্দ কোনভাবেই পরিবর্তন হয় না সে সকল শব্দকে অব্যয় পদ বলে।

বাক্যে এ সমস্ত পদ সকল লিঙ্গ, বচন ও বিভক্তিতে একই থাকে তাকে অব্যয় পদ বলে । যেমন-  আর, ও, এবং, কিন্তু ইত্যাদি।

অব্যয় পদ কত প্রকার ও কি কি

অব্যয় পদ কত প্রকার সেই সম্পর্কে এখন আমরা জানব, অব্যয় পদকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়। এখন আমরা জানব অব্যয় পদ কি কি, অর্থাৎ সেই ৩ প্রকারের নাম। নিচে অব্যয় পদ কি কি তা দেয়া হলোঃ

👉(ক) পদান্বয়ী অব্যয়

👉(খ) অনন্বয়ী অব্যয়

👉(গ) বাক্যান্বয়ী অব্যয়

✅✳️

➡️ (ক) পদান্বয়ী অব্যয়ঃ

👉 একটি বাক্যে একটি শব্দকে অন্য শব্দের সাথে সংযুক্ত করতে ব্যবহৃত অব্যয়কে (transitive prepositions)  পদান্বয়ী অব্যয় বলে।

✳️ যেমন- কর্ম ছাড়া সুখ পাওয়া সম্ভব নয়। রাকেশ আর তপন আজ বেড়াতে যাবে। আমি চাই তুমি বিয়েতে আসো।

উপরের তিনটি বাক্য ব্যতীত, এবং, কিন্তু এই অব্যয়গুলি বাক্যের মাঝখানে একটি শব্দের সাথে অন্যটি সংযুক্ত করে। তাই তারা (transitive prepositions) পদান্বয়ী অব্যয়।

➡️ (খ) অনন্বয়ী অব্যয়ঃ 

👉 যে অব্যয় বাক্যে অন্যান্য শব্দের সাথে সম্পর্কিত নয় তাকে অব্যয় অব্যয় বলে।

👉 অনন্বয়ী অব্যয়, প্রয়োগের সময় বা বিশেষ কারণে একটি বাক্য বা বাক্যাংশে একত্র রাখা হয় না, বরং সেগুলি অল্প প্রয়োগ করা হয় যাতে তার মাধ্যমে বাক্যের  ভাবনা প্রকাশ হয়। তাকে অব্যয় অব্যয় বলে।

উদাহরণ:
1. আচ্ছা: তুমি কি এই বইটি পড়েছ?
2. আরে: যে সময় তারা দেখবে, তখন তারা অবশ্যই আসবে।
3. যদিও: তার পরিশ্রমে যদিও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন, তবুও তার আত্মবিশ্বাস অপরিস্থিতি পেয় নি।
4. বাইসাইড: তারা খুব ভাল খেয়েছে, বাইসাইড এই তাদের স্বাস্থ্যে কোন ক্ষতি হয়নি।
5. পরবর্তীতে: এই বিষয়টি পরবর্তীতে আমরা আরও বিস্তারিত আলোচনা করব।

✳️ যেমন- বাহ! কি সুন্দর দৃশ্য! হায়রে এ কি ছিল আমার কপালে? মা, আমাকে আশীর্বাদ করুন।

এখানে বা: হায়, মা—এই তিনটি পদ বাক্যের বাইরে বসে এবং মানে প্রশংসা, অনুশোচনা, সম্বোধন ইত্যাদি। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই মূল বাক্যের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

উপরের উদাহরণগুলি দেখে তুমি অনন্বয়ী অব্যয় পদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পাবে।

➡️ (গ) বাক্যান্বয়ী অব্যয়

বাক্যান্বয়ী অব্যয় :-

👉যে অব্যয় বাক্যে অন্বয় বা সম্বন্ধ স্থাপন করে তাদের বাক্যান্বয়ী বা সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে।

👉 বাক্যান্বয়ী অব্যয় হল সেই অব্যয় পদ যা একটি বাক্যের অর্থ পরিবর্তন করে না, বরং তার মাধ্যমে বাক্যটি সমাহিত এবং সম্পূর্ণ রাখে। এই অব্যয় বাক্যান্বয়ী বা সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে।

উদাহরণ:
1. তবে: সকাল হলেও, তার বুকে ঠান্ডা ছিল।
2. আবার: বইটি পড়ে শেষ করার পর, আমি ঘরে ফিরে এসেছি।
3. যদিও: যদিও বৃষ্টি পড়ছে, তারা খেলা খেলছে।
4. এখানে: এখানে বইটি রাখুন, তারপর আমি দেখতে আসব।
5. অতএব: তিনি যদি আসে, তাকে অতএব স্বাগত জানানো হবে।

এই উদাহরণগুলি দেখে তুমি বাক্যান্বয়ী অব্যয় পদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পাবে।


অব্যয় পদ চেনার উপায়

অব্যয় পদ চেনার উপায় জানার কিছু নিয়োম দেয়া হলোঃ

অব্যয় পদ চেনার জন্য কিছু উপায় নিম্নলিখিত মধ্যে থেকে বেছে নিতে পারে:

1. **অব্যয়ের প্রকার:** অব্যয় পদ বিভিন্ন প্রকারে আসে, যেমন ক্রিয়াবিশেষণ, ক্রিয়াবিশেষণ, ক্রিয়াপদ, সর্বনাম, প্রত্যয় ইত্যাদি। প্রকার পর্যায়কে চিহ্নিত করতে সাহায্য করতে পারে।

2. **ব্যক্তি, সংখ্যা ও লিঙ্গ:** অব্যয় পদ অথবা তার সাথে যোগ কৃত শব্দের মাধ্যমে ব্যক্তি, সংখ্যা, লিঙ্গ ইত্যাদি চিহ্নিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, “আমাদের সবাই” (সংখ্যা), “সে গিয়েছে” (ব্যক্তি), “সে খুব ভালো” (লিঙ্গ)।

3. **যোগযোগের সাথে প্রয়োগ:** অব্যয় পদ বাক্যের যোগযোগের সাথে কোন ক্রিয়া অথবা অন্যান্য শব্দের সাথে যোগ করা হয়।

4. **বাক্যের প্রমাণ:** অব্যয় পদ বাক্যের ভাষার নিয়মানুসারে কোথায় আসতে পারে, তা অনুসরণ করে চেক করা যায়।

5. **অর্থ সম্পর্ক:** অব্যয় পদের অর্থ বুঝে আসার জন্য সেই পদের সাথে যোগকৃত শব্দের অর্থও মনন করা প্রয়োজন।

আরো জানতে পারোঃ

সহজভাবে অব্যয় পদ চেনার উপায়

১. অব্যয়পদ হলে এটি কোন বিন্দুতে স্থানান্তর করা যায় না। যেমনঃ সে খুব ভাল করেছে।

২: সংযোগ, বিয়োগ, বিকল্প, তুলনা, আবেগ, মনোভাব, পদে পদে ও বাক্যে বাক্যে সম্পর্ক স্থাপন ইত্যাদি কাজ করলে সেটি অব্যয়পদ হবে।

৩: সমস্ত উপসর্গ ও অনুসর্গ অব্যয় পদের অন্তর্ভুক্ত।

৪: কিছু কিছু অব্যয় পদে বিভক্তি যুক্ত থাকতে দেখা যায় কিন্তু অব্যয় পদের বিভক্তি ইচ্ছে মতো বদলানো যায় না। হয় শূন্য বিভক্তি থাকে নতুবা একটি নির্দিষ্ট বিভক্তিই থাকে।

৫. একটি প্রবাদ বা বাক্য যদি অব্যয় পদ ছাড়া সম্পূর্ণ থাকে তাহলে অব্যয়পদ হতে পারে। যেমনঃ সে অনেক দূর যায়।

৬. এটি বাক্যের অন্য কোন অংশের জন্য কাজ করতে পারে। যেমনঃ সে সুন্দরভাবে গান গায়। (সুন্দরভাবে এখানে ক্রিয়াবিশেষণ হিসেবে কাজ করছে)

৭. যদি কোন শব্দ কোন বাক্যে ব্যবহৃত হয় এবং তার আগে কোন শব্দের মান পরিবর্তন না হয়, তাহলে সেটি অব্যয়পদ হতে পারে। যেমনঃ তার আসল নাম মুহাম্মদ।

বাংলা ভাষায় তিন ধরনের অব্যয় শব্দ আছে-

বাংলা অব্যয় শব্দ : আর, আবার, ও, হাঁ, না

তৎসম অব্যয় শব্দ : যদি, যথা, সদা, সহসা, হঠাৎ, অর্থাৎ, দৈবাৎ, বরং, পুনশ্চ, আপাতত, বস্তুত ইত্যাদি।

বিদেশি অব্যয় শব্দ : আলবত, বহুত, খুব, শাবাশ, খাসা, মাইরি, মারহাবা। (মনে রাখার টেকনিক – মামাকে আশা খুব খাওয়ায়)

অনন্বয়ী অব্যয় কত প্রকার ও কি কি :-

অনন্বয়ী অব্যয় আবার ছয় প্রকার। এগুলো হলো-

👉 বাক্যালঙ্কার অব্যয়,

👉ভাবপ্রকাশক অব্যয়,

👉সংযোগমূলক অব্যয়,

👉সম্মতিসূচক অব্যয়,

👉উপমাবাচক অব্যয় ও

👉 অনুকার অব্যয়

➡️ বাক্যালঙ্কার অব্যয় কাকে বলে?
– বাক্যের সুন্দর ও আকর্ষণীয় করার জন্য ব্যবহৃত অব্যয় পদকে “বাক্যালঙ্কার অব্যয়” বলা হয়।

➡️ ভাবপ্রকাশক অব্যয় কাকে বলে?
– কোন ব্যক্তির ভাব বা আবেগ প্রকাশ করার জন্য ব্যবহৃত অব্যয় পদকে “ভাবপ্রকাশক অব্যয়” বলা হয়।

➡️ সংযোগমূলক অব্যয় কাকে বলে?
– দুটি বাক্য বা বাক্যাংশের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করার জন্য ব্যবহৃত অব্যয় পদকে “সংযোগমূলক অব্যয়” বলা হয়।

➡️ সম্মতিসূচক অব্যয় কাকে বলে?
– একটি সাধারণ সম্মতি বা অসম্মতি প্রকাশ করার জন্য ব্যবহৃত অব্যয় পদকে “সম্মতিসূচক অব্যয়” বলা হয়।

➡️ উপমাবাচক অব্যয় কাকে বলে?
– একটি উপমা (তুলনা) করার জন্য ব্যবহৃত অব্যয় পদকে “উপমাবাচক অব্যয়” বলা হয়।

➡️ অনুকার অব্যয় কাকে বলে?
– কোন ব্যক্তির ক্রিয়া বা কাজের সাথে একসাথে ঘটনা সম্পর্কে ব্যবহৃত অব্যয় পদকে “অনুকার অব্যয়” বলা হয়।

অনন্বয়ী অব্যয় উদাহরণঃ

👉 বাক্যালঙ্কার অব্যয় এর উদাহরণ:
– সুন্দর বনে তার চোখে পদ্মফুল মকরলে।
– শ্যামলী আকাশে মুখে তার সোনার সূর্য উদয়।

👉 ভাবপ্রকাশক অব্যয় এর উদাহরণ:
– প্রিয় দেখতে পেয়েছি, সে আজ খুশি।
– তার শব্দ শুনে আমি অত্যন্ত আকর্ষিত হয়ে উঠলাম।

👉 সংযোগমূলক অব্যয় এর উদাহরণ:
– বৃষ্টি পড়লে সবাই বাড়িতে আসে।
– সকালে উঠলে সূর্য উদিত হয়।

👉 সম্মতিসূচক অব্যয় এর উদাহরণ:
– তারা এসে সবাই মিলে গান গাইল।
– আমরা সবাই এই প্রস্থান করতে সম্মত।

👉 উপমাবাচক অব্যয় এর উদাহরণ:
– তার শিক্ষা সেমলো একটি উজ্জ্বল দ্যুতি, যেমন সূর্যের কিরণ।
– তার মত ব্যক্তির চেহারা ছবি আকারে, যেমন চাঁদের মুখ।

👉 অনুকার অব্যয় এর উদাহরণ:
– তার কাজটি শেষ হয়ে গেল, তারপর সবাই চিরকাল মনে করতে লাগল।
– আমরা এখানে বসে থাকি, তারপর এসে যাব।

নিচে অনন্বয়ী অব্যয় বিস্তারিত ভাবে জানতে পাবেঃ 

➡️ বাক্যালঙ্কার অব্যয়ঃ

👉 যে অব্যয় বাক্যের মধ্যে বসে বাক্যের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, তাকে বাক্যালঙ্কার অব্যয় বলে।

অথবা; 👉 বাক্যালঙ্কার অব্যয় হল এমন অব্যয় পদ যা বাক্যের সৌন্দর্য, চমত্কারতা, সাহিত্যিকতা, বহুলতা ইত্যাদি বৃদ্ধি করে এবং বাক্যের ভাষা মধুর ও আকর্ষণীয় তৈরি করে। এই অব্যয় পদের মাধ্যমে বাক্যে বিশেষ মানসিক প্রভাব তৈরি হয়।

✳️ উদাহরণ:
1. **অনুপ্রাস:** আসো আমি যাই যেথা।
2. **যমক:** স্বর্গে যাওয়ার আমি ইচ্ছুক।
3. **উল্লেখযোগ্য সাম্য:** সে তোমার কাছে আসলে একটা আশা প্রত্যাশা আরও বড় হয়ে যায়।
4. **ক্রিয়াবিশেষণ বর্ণনা:** একে অপরের জীবনে নতুন প্রাণ আসানোর জন্য প্রয়োজনীয় বহুবার আসে।
5. **উল্লেখযোগ্য সাপেক্ষ উপসর্গ:** মেঘে মেঘে আসে বৃষ্টি, মানুষের হৃদয়ে উত্সাহের বৃষ্টি।
6. **উপমা:** সে শব্দের মধ্যে মাত্র দুটি অক্ষর, কিন্তু তার মাধ্যমে এক অদ্ভুত ভাষার ব্যাপার।

উপরের উদাহরণগুলি দেখে তুমি বাক্যালঙ্কার অব্যয় পদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পাবে।

✳️ যেমন – এ গাড়ি তো গাড়ি নয়। দেখে মনে হয় যেন উরজাহাজ। ‘তো’ ‘যেন’ এগুলি বাক্যালঙ্কার অব্যয়। কারণ এগুলি বাক্যের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে।

➡️ ভাবপ্রকাশক অব্যয় :-

👉 যে অব্যয় বক্তার মনের ভাব প্রকাশ করে, তাকে ভাব প্রকাশক অব্যয় বলে।

অথবা; 👉 ভাবপ্রকাশক অব্যয়, বাক্যে বা বাক্যাংশে কোন ক্রিয়ার ভাবনা, আবেগ, ভাব, অবস্থা, মন্তব্য ইত্যাদি প্রকাশ করার জন্য ব্যবহৃত অব্যয় পদ। এই অব্যয় পদ আমরা সাধারণভাবে বাক্যের অর্থের বেশ একটা গভীর পার্থক্য যোগ করতে ব্যবহার করি।

✳️ উদাহরণ:
1. আমি খুশি। (খুশি হওয়ার ভাবনা প্রকাশ করার জন্য অব্যয় পদ)
2. তার চোখে আবেগ দেখা গেল। (চোখে আবেগ প্রকাশ করার জন্য অব্যয় পদ)
3. তিনি ভীত। (ভীত অবস্থা প্রকাশ করার জন্য অব্যয় পদ)
4. তার বলতে আগ্রহ প্রকাশ করা যেতে পারে। (বলতে আগ্রহ প্রকাশ করার জন্য অব্যয় পদ)
5. এই প্রদর্শনীতে তার মুখে হাসি ছিল। (মুখে হাসি প্রদর্শন করার জন্য অব্যয় পদ)

 উপরের উদাহরণগুলি দেখে তুমি ভাবপ্রকাশক অব্যয় পদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পাবে।

✳️ যেমন – মরি মরি! একি লজ্জা! ধন্য ধন্য। বাংলাদেশ।

এখানে মরি মরি, ধন্য ধন্য বিশেষ ভাব প্রকাশ করেছে। তাই এগুলি ভাব প্রকাশক অব্যয়।

➡️ সংযোগমূলক অব্যয়

👉  সংযোগমূলক অব্যয়, দুটি বাক্য বা বাক্যাংশ সংযোজনের জন্য ব্যবহৃত অব্যয় পদ। এই অব্যয় পদের মাধ্যমে বাক্যাদির সাথে সংযোজন বা যোগদান করা হয়।

✳️ উদাহরণ:
1. আমি বই পড়তে আসতাম, কিন্তু আমার বন্ধু আসল না।
2. বৃষ্টি পরে, তাই আমরা খেলাধুলা বাদ দিতে হবে।
3. তিনি কর্মসূচি দিয়েছেন, তাই আমরা সেই মতে কাজ করতে হবে।
4. বাসা বেড়ে গেছে, কারণ তারা বাড়ি কিনেছে।
5. আমি বিদেশ যাত্রা করতে যাব, যদি আমার ভিসা আসে।

উপরের উদাহরণগুলি দেখে তুমি সংযোগমূলক অব্যয় পদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পাবে।

 

সম্মতি বা অসম্মতিসূচক অব্যয় :-

👉যে অব্যয় পদের দ্বারা বক্তার মনের ইচ্ছা বা অনিচ্ছা প্রকাশ পায়, তাকে সম্মতি বা অসম্মতিসূচক অব্যয় বলে।

অথবা; 👉 সম্মতি বা অসম্মতিসূচক অব্যয়, বাক্যের মধ্যে কোন কিছুকে সমর্থন বা অসমর্থন করার জন্য ব্যবহৃত অব্যয় পদ। এই অব্যয় পদ ব্যক্তির মতামত বা অভিব্যক্তির প্রকাশনে ব্যবহৃত হয়।

✳️ উদাহরণ:
✅1. সম্মতি সূচক অব্যয়:
– নিশ্চিতভাবে আমি তার সম্মত।
– তার প্রস্তাবনা সম্মতি পেয়েছে।
– সবাই একমত যে সে উত্তরটি সঠিক দিয়েছে।

✅ 2. অসম্মতিসূচক অব্যয়:
– তার আলোচনা করতে তারা অসম্মত।
– আমি তার প্রস্তাবনায় অসম্মত।
– কোন বিষয়ে আপনি অসম্মতি প্রকাশ করতে পারেন।

উপরের উদাহরণগুলি দেখে তুমি সম্মতি বা অসম্মতিসূচক অব্যয় পদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পাবে।

✳️ যেমন – হ্যাঁ, আমি তো যাবই। না, কথাটা সত্যি নয়।

এখানে হ্যাঁ সম্মতিসূচক অব্যয় এবং না অসম্মতিসূচক অব্যয়।

➡️ উপমাবাচক অব্যয়ঃ

👉 উপমাবাচক অব্যয়, বাক্যের অর্থ বৃদ্ধি করার জন্য একটি উপমার মাধ্যমে ব্যবহৃত অব্যয় পদ। এই অব্যয় পদের মাধ্যমে সামান্য ব্যক্তির জ্ঞান বা বুদ্ধির আলোকে মুখে বলা প্রদর্শন করা হয়।

✳️ উদাহরণ:
1. সে বিজয়ী বন্ধুর মত।
2. শিক্ষক তার শিষ্যদের প্রতি যত্ন নেয়, শিক্ষার সন্দেশ দেওয়া হয়ে যেতেছে, যেমন বৃষ্টির মতো।
3. তার বক্তৃতা যেমন একটি মাঝারী নদী, প্রেমিকের হৃদয়ে পৌঁছাতে হয়ে যায়।
4. তার কথা শুনে আমার মনে আসল যে প্রফুল্ল গ্রীষ্ম ঋতু, যেমন নদীর তরঙ্গ গুণে।
5. সে যেন একটি প্রস্তুত গোলমাল, কোনো কিছু বুঝাতে গেলে অনেক সহজে।

উপরের উদাহরণগুলি দেখে তুমি উপমাবাচক অব্যয় পদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পাবে।

সম্বোধনসূচক অব্যয় :-

👉  যে অব্যয়ের দ্বারা কাউকে সম্বোধন করা বোঝায়, তাকে সম্বোধনসূচক অবায় বলে।

অথবা; 👉 সম্বোধনসূচক অব্যয়, বাক্যে কাউকে আহ্বান বা সম্মান করার জন্য ব্যবহৃত অব্যয় পদ। এই অব্যয় পদের মাধ্যমে বাক্যে কোন ব্যক্তিকে কাজ করার অনুরোধ করা হয়।

✳️ উদাহরণ:
1. আমার সহযোগিতায়, স্নেহে এবং দেখার প্রয়াসে, তুমি আমার পাশে থাকতে হবে।
2. বন্ধুগণ, আমি তোমাদেরকে আমার বাড়িতে আনতে আহ্বান জানাচ্ছি।
3. প্রিয় শ্রোতা, তুমি যদি আজ সভায় আসতে পারো, তাহলে আমি অত্যন্ত আনন্দিত হব।
4. মা, তুমি কি খাচ্ছ না? আমি তোমাকে খাওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
5. সকল সভাদের আগ্রহে, আমি আপনাদের সকলকে এই মহৎ উদ্যোগে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

উপরের উদাহরণগুলি দেখে তুমি সম্বোধনসূচক অব্যয় পদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণা পাবে।

✳️ যেমন – হ্যাঁগো, আজ কলকাতা যাবে কি? ওরে, একবার এদিকে আয়।

অনুকার অব্যয় :-

যে সব শব্দ ধ্বনির ব্যঞ্জনা দেয় তাকে, ধ্বন্যাত্মক অব্যয় বা অনুকার অব্যয় বলে।

যেমন – ঝমঝম্ করে বৃষ্টি পড়ছে। শোঁ শোঁ শব্দে বাতাস বইছে। হনহন করে হেঁটে যাচ্ছে।

বাক্যান্বয়ী অব্যয়ের প্রকারভেদ :-

অন্যদিকে বাক্যান্বয়ী অব্যয়কে আবার নানা ভাবে ভাগ করা যায়। যেমন-

👉  সংযোজক অব্যয়,

👉  বিয়োজক অব্যয়,

👉  সংকোচক অব্যয়,

👉  হেতুবাচক অব্যয়,

👉  সিদ্ধান্তবাচক অব্যয় এবং

👉  নিত্যসম্বন্ধীয় অব্যয়।

➡️ সংযোজক অব্যয় কাকে বলে? 
সংযোজক অব্যয় বাক্যের বিভিন্ন অংশগুলি সংযোজন করার জন্য ব্যবহৃত অব্যয় পদকে বলে। এই অব্যয় পদ দ্বারা দুটি বাক্য বা বাক্যাংশ সংযোজন হয় এবং তাদের মধ্যকার সম্পর্ক প্রকাশ করা হয়।

➡️ বিয়োজক অব্যয় কাকে বলে?
– বিভিন্ন বাক্যের মধ্যে বিভিন্নতা সৃষ্টি করার জন্য ব্যবহৃত অব্যয় পদকে “বিয়োজক অব্যয়” বলা হয়।

➡️ সংকোচক অব্যয় কাকে বলে?
– ব্যক্তির অভিব্যক্তি সংকোচন করার জন্য ব্যবহৃত অব্যয় পদকে “সংকোচক অব্যয়” বলা হয়।

➡️ হেতুবাচক অব্যয় কাকে বলে?
– ব্যক্তির মতামত অনুমান বা বিশ্লেষণ করার জন্য ব্যবহৃত অব্যয় পদকে “হেতুবাচক অব্যয়” বলা হয়।

➡️ সিদ্ধান্তবাচক অব্যয় কাকে বলে?
– ব্যক্তির সিদ্ধান্ত বা পূর্বপ্রয়োগ প্রদর্শন করার জন্য ব্যবহৃত অব্যয় পদকে “সিদ্ধান্তবাচক অব্যয়” বলা হয়।

➡️ নিত্যসম্বন্ধীয় অব্যয় কাকে বলে?
– সময় এবং স্থান নির্দিষ্ট না করে, চিরকাল বা নিত্য সম্পর্কিত ব্যক্তিগত সত্য প্রকাশ করার জন্য ব্যবহৃত অব্যয় পদকে “নিত্যসম্বন্ধীয় অব্যয়” বলা হয়।

উদাহরণ দেওয়া হল:

👉 সংযোজক অব্যয়:
– বাক্যের পার্থক্যকে সংযোজন করতে ব্যবহৃত হয়।
– উদাহরণ: “তিনি এসেছিলেন এবং আমরা সকল খুশি হয়ে উঠলাম।”

👉 বিয়োজক অব্যয়:
– দুটি বাক্য বা বাক্যাংশের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
– উদাহরণ: “সূর্য উদয় হয় এবং দেশের জনগণ প্রস্থান করে।”

👉 সংকোচক অব্যয়:
– এই অব্যয় ব্যক্তির অভিব্যক্তি সংকোচন করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
– উদাহরণ: “প্রশ্ন থেকে প্রশ্ন নেয়।”

👉 হেতুবাচক অব্যয়:
– এই অব্যয় ব্যক্তির মতামত অনুমান বা বিশ্লেষণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
– উদাহরণ: “সবাই এখানে প্রেস্তুত, তাই আমরা দেখতে পাবো কি ঘটছে।”

👉 সিদ্ধান্তবাচক অব্যয়:
– এই অব্যয় ব্যক্তির সিদ্ধান্ত বা পূর্বপ্রয়োগ প্রদর্শন করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
– উদাহরণ: “যে গবেষণা প্রতিষ্ঠান এই তথ্য জমা করে, তা অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য।”

👉 নিত্যসম্বন্ধীয় অব্যয়:
– সময় এবং স্থান নির্দিষ্ট না করে, চিরকাল বা নিত্য সম্পর্কিত ব্যক্তিগত সত্য প্রকাশ করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

– উদাহরণ: “মানুষ মৃত্যুর পরে একটি নিত্য জীবন পেতে।”

 

অব্যয় পদ শ্রেণীবিভাগ নিম্নলিখিত ভাবে বিভক্ত করা যেতে পারে:

**খাঁটি বাংলা অব্যয় এর উদাহরণ:**
– যাইহোক, সে বাজারে যায়।
– আসলে, আমি তোমাকে জানি।

**অনুকার অব্যয় কাকে বলে:**
– সে গেল, আমি তার পক্ষে আসি।
– যদি সত্যি বলো, তাহলে তুমি তা জানো।

**সমুচ্চয়ী অব্যয় কত প্রকার:**
সমুচ্চয়ী অব্যয় দুটি প্রকারে আসে: স্থানীয় এবং সময়সূচক।
– স্থানীয়: এখানে, সেখানে, ওই জায়গায়, আমাদের দাঁড়িয়ে।
– সময়সূচক: এখন, আজ, আসন্ন, পূর্বে, পরে।

**পদান্বয়ী অব্যয় কাকে বলে:**
পদান্বয়ী অব্যয় দুটি প্রকারে আসে: ক্রিয়া প্রধান এবং স্বতঃ প্রধান।
– ক্রিয়া প্রধান: যাচ্ছি, এসেছি, খাচ্ছি, পড়ছি।
– স্বতঃ প্রধান: আমি, তুমি, সে, তা, আমরা, তুমি, তারা।

**পদান্বয়ী অব্যয় উদাহরণ:**
– তিনি খুব গুস্তি।
– আমরা এই বইটি পড়ছি।

**আলংকারিক অব্যয় কাকে বলে:**
– শেষ হলে, তার হাসি পরে যায়।
– বেশি বলতে, সে এটি বেশি খেতে পারে।

**প্রশ্নবোধক অব্যয় কাকে বলে:**
– তুমি কোথায় যাচ্ছো?
– কেমন তুমি?

**সংযোজক অব্যয় কাকে বলে উদাহরণ দাও:**
– যদি তুমি আসো, তাহলে আমি খুশি।
– আমি বইটি পড়তে এবং লেখতে পারি।

**অনন্বয়ী অব্যয় উদাহরণ:**
– তার গেলে, আমি খুব দুঃখিত হয়ে যাব।
– আসন্ন সময়ে, আমরা বাড়ি ফিরব।

**অনুসর্গ অব্যয় কাকে বলে:**
– উপকারণে, আমি তা করতে চেষ্টা করি।
– অবশেষে, সে সব জানতে পারলো।

**অব্যয় পদ উদাহরণ:**
– তাও এসেছে।
– যদি আমি পারি, তাহলে আমি করব।

উপরের উল্লিখিত উদাহরণগ

সহযোগী হতে পারে অব্যয় পদের শ্রেণীবিভাগ চিহ্নিত করার জন্য।

মন্তব্য করুন

You cannot copy content of this page