সর্বনাম কাকে বলে, কত প্রকার ও কী কী, উদাহরণ সহ

সর্বনাম কাকে বলে – সর্বনাম হলো এমন পদ বা শব্দ, যা বিশেষ্য পদের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়। এটি বাংলা ব্যাকরণের একটি মৌলিক প্রকারের পদ যা নাম প্রকাশ করে এবং ব্যবহৃত প্রকাশের ব্যাপারে উল্লিখিত হয়। সর্বনাম বিভিন্ন ধরণের হতে পারে এবং প্রত্যেকটি ধরণের সর্বনামের ব্যবহার বিভিন্ন সংদর্ভে হতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, “আমি,” “তুমি,” “সে,” “তিনি,” “আমরা,” “তোমরা,” ইত্যাদি সর্বনামের উদাহরণ। সর্বনামের উদ্দেশ্য বাক্যের সাধারণ নাম প্রকাশ করা, সম্পর্ক তৈরি করা, অবস্থা সূচনা ইত্যাদি।

সর্বনাম পদের ব্যবহার নাম পদের প্রতি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সংজ্ঞা করতে সাহায্য করে এবং বাক্যের স্বরূপ সুন্দর এবং সহজ করে তৈরি করে। সর্বনাম বিশেষ্য পদের সংজ্ঞা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির ব্যক্তিগত বা সাধারণ সংজ্ঞা দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়।

সর্বনামের উপর ভিত্তি করে বাক্য তৈরি করা সাধারণ এবং সহজ হয়, এবং এটি সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে যাতে বাক্য স্পষ্ট এবং সংক্ষেপণী হয়।

সর্বনাম কাকে বলে

সর্বনাম বা Pronoun হলো এমন পদ বা শব্দ, যা বাক্যের বিশেষ্য পদের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়। সর্বনাম বাংলা ব্যাকরণের একটি মৌলিক পদ যা নাম প্রকাশ করে এবং ব্যবহৃত প্রকাশের ব্যাপারে উল্লিখিত হয়। সর্বনাম বিভিন্ন ধরণের হতে পারে এবং প্রত্যেকটি ধরণের সর্বনামের ব্যবহার বিভিন্ন সংদর্ভে হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, “আমি,” “তুমি,” “সে,” “তিনি,” “আমরা,” “তোমরা,” ইত্যাদি সর্বনামের উদাহরণ। সর্বনামের উপর ভিত্তি করে বাক্য তৈরি করা সাধারণ এবং সহজ হয়, এবং এটি সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে যাতে বাক্য স্পষ্ট এবং সংক্ষেপণী হয়।

বাংলা ভাষায় সর্বনাম পদ নানারকম হয়। যেমন :

১.ব্যক্তিবাচক সর্বনাম : আমি, আমরা, তুমি, তোমরা, সে, তারা, তিনি, এরা, ওরা ইত্যাদি।

২. নির্দেশক সর্বনাম : এ, এটি, সেটি, সেগুলো ইত্যাদি ৷

৩. সাকল্যবাচক সর্বনাম : সকল, সব, সমুদয় ইত্যাদি।

৪. সাপেক্ষ সর্বনাম : যে-সে, যা-তা, যিনি-তিনি ইত্যাদি।

৫. প্রশ্নসূচক সর্বনাম : কী, কার, কাদের, কিসে ইত্যাদি ।

৬. অনির্দেশক সর্বনাম : কেউ, কোন, কেহ, কিছু ইত্যাদি।

৭. আত্মবাচক সর্বনাম : স্বয়ং, নিজ, খোদ, আপনি ইত্যাদি।

৮. অন্যাদিবাচক সর্বনাম : অন্য, অপর, পর ইত্যাদি।

সর্বনামের ধরণ

সর্বনামের প্রধান ধরণের চারটি প্রকার রয়েছে:

  1. ব্যক্তিগত সর্বনাম: এই সর্বনাম ব্যক্তিগত বা ব্যক্তির উল্লিখিত ব্যক্তিগত নাম বা পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়, উদাহরণস্বরূপ, “আমি,” “তুমি,” “সে,” “তিনি.”
  2. সাধারণ সর্বনাম: এই সর্বনাম সাধারণ বা জনসাধারণ উল্লিখিত স্থান বা বস্তুর পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়, উদাহরণস্বরূপ, “এটা,” “সেটা,” “ওই,” “যে,” “কোনটি.”
  3. প্রশ্নসর্বনাম: এই সর্বনাম প্রশ্ন উল্লেখ করতে ব্যবহৃত হয়, উদাহরণস্বরূপ, “কোন,” “কোনটা,” “কোন কে.”
  4. প্রতিস্থাপন সর্বনাম: এই সর্বনাম অন্যান্য সর্বনামকে প্রতিস্থাপন করতে ব্যবহৃত হয়, উদাহরণস্বরূপ, “স্বয়ং,” “একে,” “একটি.”

সর্বনামের ব্যবহার

সর্বনাম বাক্যের নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহারের উদাহরণ নিম্নলিখিত:

  • নামের পরিবর্তে: “মিলি খেলছে। উনি খুব সুন্দর খেলতে পারে।”
  • সম্পর্ক তৈরি: “আমি আপনাকে দেখতে চাই।”
  • প্রশ্ন তৈরি: “তুমি কোন বইটি পড়ছ?”

সর্বনামের প্রধান বৈশিষ্ট্য

সর্বনামের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এইসাথে এটি নামের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় এবং এটি সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে। এটি বাক্যের স্বরূপ সংক্ষেপণী করে এবং এটি বাক্যের স্থান পরিবর্তন করে নেয়।

সর্বনামের ধরণ উদাহরণ
ব্যক্তিগত সর্বনাম আমি, তুমি, সে, তিনি
সাধারণ সর্বনাম এটা, সেটা, ওই, যে, কোনটি
প্রশ্নসর্বনাম কোন, কোনটা, কোন কে
প্রতিস্থাপন সর্বনাম স্বয়ং, একে, একটি

 সর্বনামের প্রকারভেদ 

১) ব্যক্তিবাচক সর্বনাম বা পুরুষবাচক সর্বনাম :

যে সর্বনাম ব্যক্তিগত বা পুংলিঙ্গ সর্বনামের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় তাকে ব্যক্তিগত সর্বনাম বলে। একে পুংলিঙ্গ সর্বনামও বলা হয়। পুরুষবাচক সর্বনাম তিন প্রকার-

(ক) প্রথম পুরুষের সর্বনাম বা বিপরীত পক্ষের সর্বনাম

(খ) মধ্য পুরুষের সর্বনাম বা শ্রোতার সর্বনাম

(গ) প্রথম ব্যক্তির সর্বনাম বা বক্তার সর্বনাম।

উদাহরণ : আমি, তুমি, আমরা, তোমরা, সে , তারা ইত্যাদি।

বাক্যে প্রয়োগ – তুমি কোন কাননের ফুল । বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি ।

নির্দেশক সর্বনাম :

যে সর্বনাম কোনো ব্যক্তি, বস্তু ইত্যাদি নির্দেশ  করে, তাদের নির্দেশক সর্বনাম বলে।

উদাহরণ : এ,এই, ও,ওই , ইহা , উহা ,তা,তাহা,ইনি,উনি  ইত্যাদি

বাক্যে প্রয়োগ: উনি আজ আসবেন। , ইহা বর্তমান কালের ফ্যাসন হইয়াছে ।

নির্দেশক সর্বনাম দুই প্রকার-

 (ক) সামীপ্যবাচক নির্দেশক সর্বনাম বা নৈকট্যসূচক নির্দেশক সর্বনাম ও

(খ) দূরত্ত্ববাচক নির্দেশক সর্বনাম ।

যে সর্বনাম কাছের বা নিকটের কোনো ব্যাক্তি বা বস্তুকে নির্দেশ করে তাদের সামীপ্যসূচক বা নৈকট্যসূচক  নির্দেশক সর্বনাম বলে । যেমন: এ,এই,ইহা,ইনি,এরা ইত্যাদি।

যে সর্বনাম দূরের কোনো ব্যাক্তি বা বস্তুকে নির্দেশ করে তাদের দূরত্ত্ববাচক  নির্দেশক  সর্বনাম বলে ।  যেমন: ও,ঐ,উনি,ওরা,উহা ইত্যাদি।

৩) অনির্দেশক সর্বনাম :

যে সর্বনাম কোনো ব্যক্তি,বস্তু,বা ভাবকে নির্দিষ্ট করে বোঝায় না , তাদের অনির্দেশক সর্বনাম বলে।

উদাহরণ : কেউ,কেহ,কেউ কেউ,কিছু,কিছু কিছু ,কোথাও ইত্যাদি ।

বাক্যে প্রয়োগ- কেউ কেউ এ কথা জানে । কিছু কিছু ভুল হয়েছে ।

৪) প্রশ্নবাচক সর্বনাম : 

যে সর্বনাম দ্বারা কোনো কিছু জানতে চাওয়া হয় বা প্রশ্ন করা হয় ,তাকে প্রশ্নবাচক সর্বনাম পদ বলে ।

উদাহরণ : কে,কী,কি,কোন,কারা, ইত্যাদি ।

বাক্যে প্রয়োগ – কে আজ আসবে ? তুমি কী খেয়েছো ?

৫) আত্মবাচক সর্বনাম :

‘অন্য কারো সাহায্য ছাড়া’ এই ভাবটি বোঝাবার জন্য বিশেষ্য ও সর্বনামের সঙ্গে যে সর্বনাম ব্যবহৃত হয় তাকে আত্মবাচক সর্বনাম বলে । এই সর্বনাম নিজস্ব বা আত্মভাব প্রকাশ করে ।

উদাহরণ : স্বয়ং , নিজে , নিজ , খোদ , নিজে-নিজে , আপনি,আপনারে ইত্যাদি।

বাক্যে প্রয়োগ – তিনি স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন । আপনি নিজে কাজটি করেছেন ।

৬) সাপেক্ষ সর্বনাম বা নিত্যমম্বন্ধী সর্বনাম :

যে সর্বনাম পদ দুই বা ততোধিক ব্যক্তি বা বস্তুর সংযোগ সাধন করে বা সঙ্গতি বিধান করে তাকে সাপেক্ষ সর্বনাম বলে । এই সর্বনামগুলি নিত্য সম্বন্ধযুক্ত থাকে ,অর্থাৎ একটি ব্যবহার করলে আর একটি ব্যবহার করতেই হয় । এই সর্বনামকে সঙ্গতিবাচক বা সংযোগবাচক সর্বনামও বলে । এই সর্বনামকে সমুচ্চয়ী সর্বনামও বলে ।

 উদাহরণ : যে-সে,যিনি-তিনি,যাহা-তাহা,যা-তা,যাকে-তাকে

বাক্যে প্রয়োগ – সে সহে সে রহে । যত মত তত পথ ।

৭) সমষ্টিবাচক সর্বনাম বা সাকল্যবাচক সর্বনাম :

যে সর্বনামের দ্বারা সমষ্টিবাচক ব্যক্তি,বস্তু বা ভাবকে বোঝানো হয়, তাকে সমষ্টিবাচক সর্বনাম বা সাকল্যবাচক সর্বনাম বলে।

উদাহরণ : সব,সর্ব,সকল,সবাই,সবার,সবে ইত্যাদি ।

বাক্যে প্রয়োগ – সকলের তরে সকলে আমরা ।

৮) ব্যতিহারিক বা পারস্পরিক সর্বনাম –

যে সর্বনামের দ্বারা পারস্পরিক সম্বন্ধ  বোঝানো হয়, তাকে পারস্পরিক বা ব্যতিহারিক  সর্বনাম বলে।

এই সর্বনামে ‘অন্যের প্ররোচনা বা সাহায্য ব্যতীত’ এই রকম অর্থ প্রকাশিত হয় ।

উদাহরণ : নিজে-নিজে , আপনা-আপনি

বাক্যে প্রয়োগ – নিজে নিজে কাজটি করো । আপনা আপনি জেগে উঠল ।

৯) অন্যাদিবাচক সর্বনাম –

যে সর্বনাম উদ্দিষ্টভিন্ন অন্য কোনো ব্যক্তি ,বস্তু বা ভাবকে নির্দেশ করে তাকে অন্যাদিবাচক সর্বনাম বলে ।

উদাহরণ : অন্য,অপর,অমুক ইত্যাদি ।

বাক্যে প্রয়োগ – তুমি নও অন্য কেউ কাজটি করেছে ।

১০) যৌগিক সর্বনাম

দুটি সর্বনাম পদ যুগ্মভাবে একটি সর্বনাম হিসাবে ব্যবহৃত হলে তাকে যৌগিক সর্বনাম বলে ।

এই সর্বনাম আসলে অনির্দেশক সর্বনাম হিসেবেই পরিচিত ।

যেমন: যে কেউ, কে একটা, যা কিছু ইত্যাদি।

কখনো কখনো সর্বনাম পদের পরপর দুবার প্রয়োগ হয়,তাকে আমরা সর্বনামের দ্বিত্ব বলি ।

যেমন: কেউ কেউ এ রকম মনে করে । যে যে যাবে এসো ।

কিন্তু সর্বনামের দ্বিত্ব এবং যৌগিক সর্বনাম এক বিষয় নয় ।

আরো জানতে পারোঃ

সর্বনাম কাকে বলে – সমাপ্তি

সর্বনাম কাকে বলে এবং সর্বনাম বাংলা ব্যাকরণে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ এবং নাম পদের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয় যা বাক্যের স্বরূপ সংক্ষেপণী করে এবং সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে। এটি বাংলা ভাষা ও ব্যাকরণের পূর্ণরূপে সম্প্রেষণ করার সৌভাগ্য সবার।

বিঃদ্রঃ এটি একটি সাধারণ এবং সংক্ষিপ্ত পর্যায়ের লেখা, ব্যাকরণ নিয়ে আরও বিস্তারিত জ্ঞান নিতে হলে নিম্নে উল্লিখিত বইগুলি মনোনিবেশ করা সুপার্যন্ত:

  1. “বাংলা ভাষার ব্যাকরণ” – প্রফেসর মুহাম্মদ শাহিদুল ইসলাম
  2. “সম্পূর্ণ বাংলা ব্যাকরণ” – ডঃ নাজমুল হক
  3. “বাংলা ব্যাকরণ ও বাণীশাস্ত্র” – ডঃ আবুল বাশার
  4. “সাধারণ সর্বনাম ও সম্পর্ক সর্বনাম” – মুহাম্মদ জাকারিয়া

এই বইগুলি পাওয়া যায় বৃহত্তর বইসমূহের বইগুলির সাথে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করতে।

আমাদের বাংলা ভাষা ও ব্যাকরণ সম্পর্কে আরও জানতে এই বইগুলি অনুশস্য হতে পারে।

মন্তব্য করুন

You cannot copy content of this page